গ্রাম বাংলা ডেস্ক: বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর রহদহ বাঁধের ৩০০ মিটার অংশ গতকাল বৃহস্পতিবার প্রবল পানির তোড়ে ভেঙে পড়েছে। এতে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আশ্রয় হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে রয়েছে এসব গ্রামের হাজারো মানুষ।
গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে বাঁধটি ভেঙে যায়। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পানিবন্দী মানুষ অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। কাছাকাছি কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
কুতুবপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ভাষ্য, তিনি ঘুমিয়েছিলেন। হঠাত্ করে বাড়িঘরে পানি ঢুকে যায়। ঘরে যা ছিল, সবই পানিতে ভেসে গেছে।
রহদহ গ্রামের আবদুল মজিদের ভাষ্য, পানির শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙে। জেগে উঠে দেখেন সব ভেসে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, রাত দুইটার দিকে বাঁধ ভেঙে ৩০ থেকে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। যমুনা নদীর পানি বিপত্সীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় সাংসদ আব্দুল মান্নান ঘটনাস্থলে গেছেন। গতকাল বাঙ্গালি ও ইছামতী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দেয়। ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের চার হাজার পরিবার নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েন।
এদিকে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় বন্যানিয়ন্ত্রণ রিং বাঁধের ৩০ মিটার এলাকা পানির চাপে ধসে গেছে। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এতে ওই এলাকার চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জ-কাজীপুর-সোনামুখী সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
যেসব গ্রাম প্লাবিত হয়েছে—সেগুলো হলো মেঘাই, মেঘাই পশ্চিমপাড়া, বড়ইতলী ও কুনকুনিয়া। এখনো ওই বাঁধের ধসে পড়া অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীর প্রবল পানির চাপের কারণেই বাঁধের ৩০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ যমুনায় পানির চাপ অনেক। ধসে যাওয়া অংশে বালুর বস্তা দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা চলছে।