শ্রমিক সমাবেশে জনসমুদ্র চায় বিএনপি

Slider রাজনীতি

 

 

2016_04_19_20_38_16_8mF6HzTi2oYlar5FShNKpABHasjJKc_original

 

 

 

 

 

 

ঢাকা : মে দিবসের শ্রমিক সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। স্মরণকালের বৃহৎ জনসমাগম ঘটিয়ে এ সমাবেশকে মহাসমাবেশে পরিণত করার টার্গেট নিয়েছে দলটি। নিজেদের শক্তিমত্তার ‘ফের’ জানান দিতে সমাবেশে পাঁচ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটাতে চায় তারা। তবে এ ক্ষেত্রে প্রচণ্ড তাপদাহকে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা মনে করছে দলটি।

এদিকে, সমাবেশ সফলে শ্রমিক দলের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর বিএনপি, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। তারাও সমাবেশে জনসমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি সেরেছেন। নগর বিএনপিসহ প্রায় প্রতিটি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনও ইতোমধ্যে প্রস্ততি সভা করেছে।

তবে সমাবেশ সফল করতে মূলত ঢাকা মহানগরের ওপর নির্ভর করছে বিএনপি। সমাবেশে মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা থেকে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় তারা। এছাড়া ঢাকার পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, টঙ্গি, নরসিংদী ও সাভারসহ শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকার ওপরও নির্ভর করছে তারা।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও শ্রমিক দলের সাবেক নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান  বলেছেন, ‘শ্রমিক সমাবেশে বিশাল জনসমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আশা করি, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশে উপস্থিত হবেন। ফলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল নামবে। সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সমাবেশ সফল করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন আরো শক্তিশালী ও জোরদার করা হবে।’ সমাবেশ সফলে কত লোকের টার্গেট নেয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে নোমান বলেন, ‘সর্বোচ্চ জনসমাগম ঘটানোর চেষ্টা চলছে’।

এদিকে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য ইতোমধ্যে অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। সমাবেশটি আয়োজন করছে দলটির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বৃহস্পতিবার তাদেরকে এ বিষয়ে সম্মতি দেয়। এর আগে, গণপূর্ত অধিদপ্তর পুলিশের অনুমতি সাপেক্ষে শ্রমিক দলকে সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি দেয়।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। রোববার (১ মে) দুপুর ২টায় এ সমাবেশ শুরু হবে।

শ্রমিক সমাবেশ সফলে গত ২৭ এপ্রিল নয়া পল্টনের ভাসানী মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নগরের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মে দিবসের শ্রমিক সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হবেন। তাই শুধু শ্রমিক দল নয়, সমাবেশ সফলে বিএনপি, ঢাকা মহানগর ও এর প্রতিটি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। এ সমাবেশে স্মরণকালের বৃহৎ জনসমাগম ঘটাতে হবে।

জানতে চাইলে শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন  বলেন, ‘শ্রমিক সমাবেশকে ঘিরে শ্রমিকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) দেখা ও কথা শুনার জন্য তারা অপেক্ষা করছেন। সুতরাং যতই তাপদাহ থাকুক না কেন, তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশ অংশগ্রহণ করবে। ফলে সোহরাওয়ার্দীর এবারের সমাবেশ সর্বকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশে পরিণত হবে বলে বিশ্বাস করি।’

শ্রমিক দলের সভাপতির সঙ্গে সুর মিলিয়ে সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিমও আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শ্রমিক সমাবেশ মহাসমাবেশে পরিণত হবে।’

এদিকে, গত ২৪ এপ্রিল নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি, ঢাকা মহানগর এবং কেন্দ্রীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে যৌথসভা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী  বলেন, ‘শ্রমিক সমাবেশ সফলে প্রস্তুতি পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সভা করেছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।’

বিএনপির এই নেতা প্রত্যাশা করেন, শ্রমিক সমাবেশে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, টঙ্গি, নরসিংদী ও সাভারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে দেশনেত্রীর (খালেদা জিয়া) জনসভা (সমাবেশ) জনসমুদ্রে পরিণত হবে।

জাতীয়তাবাদী যুবদলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সম্পাদক কাজী রফিক বলেন, ‘শ্রমিক সমাবেশ সফলে যুবদলের সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’

সমাবেশে ছাত্রদলের উপস্থিতি প্রসঙ্গে সংগঠনটির সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যেকোনো সমাবেশ সফল করতে ছাত্রদল সবসময়ই সর্বাত্মক চেষ্টা করে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মে দিবসের সমাবেশেও ছাত্রদলের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকবে। কেন্দ্রীয়, ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী সব ইউনিটকে সাথে নিয়ে এতে লক্ষাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু  বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা মিলিয়ে সমাবেশে ৫০ হাজার নেতাকর্মীর সমাগম ঘটানো সম্ভব হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *