ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বহুল কাঙ্খিত সম্মেলন শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। সময় যতো ঘনিয়ে আসছে, পদ-প্রত্যাশীদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ যেন ততোই বাড়ছে। এ সম্মেলন তাদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে রীতিমতো অস্তিত্বের লড়াই।
এর মাধ্যমেই ভাগ্য নির্ধারণ হবে পদ-প্রত্যাশী নেতাদের। সম্মেলনে চারটি পদে কারা দায়িত্ব পাবেন এ সিদ্ধান্ত নেবেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ দু’ইউনিটের সম্মেলনে প্রার্থী হওয়া প্রতিটি নেতার তথ্য রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) এ দুই কমিটিতেই তরুণ নেতৃত্বের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে জেলা ও মহানগর আ.লীগের এ সম্মেলন বিশৃঙ্খলামুক্ত রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সম্মেলনস্থলকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হবে তিন স্তরের কড়া নিরাপত্তা বলয়।
জানা গেছে, সম্মেলনে জেলার দু’পক্ষে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন দুই প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান ও অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন কমপক্ষে হাফ ডজন প্রার্থী।
মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তরুণ নেতৃত্বের অভিষেক হবে, নাকি পুরনো নেতৃত্বই বহাল থাকবে এ নিয়ে শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল থেকেই চলছে নানামুখী জল্পনা।
কোনো পক্ষ প্রচার করছেন শহর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম তারা ও সাদেক খান মিল্কী টজুই বহাল থাকছেন।
আবার কেউ কেউ বলছেন সব সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশে থাকা দুই তরুণ আ.লীগ নেতা ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু ও মোহিত উর রহমান ‘ইন’ হচ্ছেন।
অবশ্য কোনো গুজবই কানে তুলতে নারাজ দলটির দায়িত্বশীল নেতারা।
গুজবের বিষয়ে সাদেক খান মিল্কী টজু বলেন, নগরীতে একেক সময় একেক রকম আওয়াজ উঠছে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া সম্ভাব্য নেতৃত্বের বিষয়ে কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারবেন না কিছু।
সব পক্ষের পদ-প্রত্যাশীরাই নিজেদের সাংগঠনিক যোগ্যতার প্রমাণ ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষে ব্যাপক শোডাউন নিয়ে সম্মেলনস্থলে এসে জড়ো হবেন।
শনিবারের সম্মেলন ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচের মতো পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে তাদের। শোডাউনে রেকর্ড সংখ্যক লোক জমায়েত করতে সব পক্ষই দলীয় কর্মীদের পেছনে মোটা অংকের টাকা খরচ করছেন।
দলীয় নেতা-কর্মীরা মনে করেন, জেলার রাজনীতিতে কারা টিকে থাকবেন এ ফয়সালাও হয়ে যাবে ৩০ এপ্রিলের সম্মেলনে।
ফলে এ দু’ইউনিটের সম্মেলন হয়ে উঠেছে দুই পক্ষের নেতাদের জন্য অস্তিত্বের লড়াই। আর এ লড়াইয়ে হার-জিত নির্ধারণ করবেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফলত এসব বিষয় মাথায় রেখেই সম্মেলনে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থাও। তবে সর্বোচ্চ তৎপরতার কথা জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক জানান, সম্মেলনে নিরাপত্তার দায়িত্বে প্রায় ৪ শতাধিক পুলিশ সার্কিট হাউজ মাঠ ও এর আশেপাশে থাকবে।
গোটা বিষয় নজরদারির জন্য থাকবে ১৫ থেকে ২০টি সিসি ক্যামেরা। এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তৎপর থাকবে পুলিশ।