চার কর্মকর্তার গাফিলতি শনাক্ত

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

 

 

11378_f6

 

 

 

 

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা চুরির ঘটনায় গঠিত ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন নেতৃত্বাধীন বিশেষ তদন্ত কমিটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে ৪ কর্মকর্তার গাফিলতি শনাক্ত করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তা গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি টাকা লোপাটের সময় কর্মরত ছিলেন। যোগাযোগ করা হলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ঘটনার সময় ব্যাক অফিসে কর্মরত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ওই সময় ব্যাক অফিসে কতজন কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে অপর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ৪ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেছেন। শিফ্‌টের মাধ্যমে সাধারণত দুইজন করে মোট ৪ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। সূত্র জানায়, পুরো তদন্ত কার্যক্রমকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সাধারণ ও আইটি এই দুই ভাগের তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে সাধারণ দিক উঠে এসেছে। এ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ফ্রন্ট অফিস, মিড অফিস ও ব্যাক অফিসের কার্যক্রম রয়েছে। এর মধ্যে ফ্রন্ট অফিস ও মিড অফিস নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (এফআরটিএমডি)। আর ব্যাক অফিস নিয়ন্ত্রণ করে একাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্ট। এফআরটিএমডির ফ্রন্ট ও মিড অফিসের সংশ্লিষ্টতা না পেলেও একাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের ব্যাক অফিসের সরাসরি গাফিলতি পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্তে ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনকে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন কমিটির সদস্য গকুল চাঁদ দাস। এবার দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে আইটি বিভাগকে নিয়ে।  এখানে ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে সরাসরি সহযোগিতা করছেন কমিটির অপর সদস্য অধ্যাপক কায়কোবাদ। যেহেতু আইটিকে ঘিরে অনেক বেশি জল্পনা-কল্পনা। সে কারণে এ পর্যায়ে বুয়েট থেকে আরও তিনজন পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। কমিটির দাবির মুখে গত সপ্তাহে এই তিন আইটি বিশেষজ্ঞকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।  তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের সুপারিশের ভিত্তিতে তদন্ত কাজে সহযোগিতার জন্য বুয়েট থেকে তিনজন আইটি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।

জানা গেছে, বর্তমানে একাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টে ৪ জন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বা উপ-মহাব্যবস্থাপক কর্মরত রয়েছেন। এদের অধীনে ৮ জন কর্মকর্তা কাজ করছেন। এদের মধ্যে দুইজন যুগ্ম পরিচালক, তিনজন উপ-পরিচালক ও তিনজন সহকারী পরিচালক রয়েছেন। এছাড়া, আইটি অপারেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টে কর্মরত রয়েছেন ৬ জন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বা উপ-মহাব্যবস্থাপক। এদের মধ্যে দুইজন ডিজিএম রয়েছেন  আলোচনার শীর্ষে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাউন্টে গচ্ছিত রিজার্ভ থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা চুরি হয় গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি। প্রায় এক মাস পর বিষয়টি প্রকাশ পেলে বিশ্বব্যাপী তা আলোচনায় আসে। তথ্য গোপনের দায়ে গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। একই সময়ে দুই জন ডেপুটি গভর্নর আবুল কাসেম ও নাজনীন সুলতানাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। সরিয়ে নেয়া হয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলমকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। এ সময় কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন ও ৭৫ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ফরাসউদ্দিন কমিটির ৩০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *