কালীগঞ্জ ঈশ্বরবা জামতলা থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া কলেজছাত্র সোহানের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। সোহান ঈশ্বরবা গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে ও স্থানীয় শহিদ নূর আলী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। নিখোঁজের ১২ দিন পর গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা গ্রামের পান্নাতলা মাঠে সোহানের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। মঙ্গলবার কলেজছাত্র সোহানকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবজমিন। এর একদিন পরই তার লাশ পাওয়া যায়। ২০১৫ সালের ৩রা মার্চ সোহানের হত্যার স্থানে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া ঝিনাইদহের যুবদল নেতা মেরাজুল ইসলামের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে ছিল।
গ্রামবাসী জানায়, সকাল ৭টার দিকে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে অল্প বয়সী এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। সোহানের খালাতো ভগ্নিপতি কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদারপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থলে এসে লাশটি তার শ্যালকের বলে শনাক্ত করেন। আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত ১০ই এপ্রিল বিকাল ৫টার দিকে ঈশ্বরবা জামতলা নামক স্থানে তার মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিল সোহান। এ সময় নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চারজন লোক ইজিবাইকে করে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায়। সেই থেকে সোহান নিখোঁজ ছিল। সোহানূর রহমানের মা পারভীন বেগম জানান, সোহান কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে পড়ালেখা করে। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৩১ পেয়ে কালীগঞ্জ শহরের শহিদ নূর আলী কলেজে ভর্তি হয়েছিল। তার প্রশ্ন- কি অপরাধ ছিল আমার সোহানের? পুলিশ পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে কেন তাকে হত্যা করা হলো? জানা গেছে, সোহানূর রহমানের বাবা ঢাকায় থাকেন। তারা দুই ভাই ও এক বোন। মাকে এগিয়ে নিতে ঈশ্বরবা জামতলা নামক স্থানে সোহানের সঙ্গে চার বছর বয়সী ছোট বোন মাসুমা আসেন। ছোট বোনের সামনেই বড় ভাইকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মাসুমা বাড়ি গিয়ে সংবাদটি পৌঁছে দেয়। সোহানের সন্ধানের দাবিতে গত ১৭ই এপ্রিল ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সোহানের পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে সোহানের বাবা বলেছিলেন, আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। ছেলের সন্ধানে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে আমি ক্লান্ত। সবাই আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। সোহানের নিখোঁজ থাকার বিষয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলে আসছেন এ ঘটনার সঙ্গে পুলিশ জড়িত নয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানা যায়নি। দুর্বৃত্তরা সোহান নামে এক কলেজছাত্রকে হত্যা করে চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে লাশ ফেলে রেখে গেছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে সোহানের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়ি পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। মা-বাবা, ছোট দুই ভাইবোন বুক চাপড়ে কাঁদতে থাকেন। আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী ও সোহানের স্কুল-কলেজের বন্ধুরাও সোহানের লাশ দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। এদিকে ঝিনাইদহ জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে এখন সাদা পোশাকের লোকজনের আতঙ্কে ভুগছে মানুষ। পুলিশ বা ডিবি পরিচয়ে লোকজন তুলে নিয়ে যাওয়ার পর লাশ মিলছে। কিন্তু কোনো কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে তাদের কোনো সদস্য এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। ফলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ২৭ জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে লাশ পাওয়া গেছে ২৪ জনের। বাকি তিনজন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর ও রাজনৈতিক দলের দাবি মতে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ৩ জন বিএনপি, ৬ জন জামায়াত-শিবির, ১ জন আওয়ামী লীগের কর্মী নিহত হয়েছেন। বাকি ১৪ জনের বিরুদ্ধে চরমপন্থি ও সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সময় বিশেষ কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। ঝিনাইদহের মানুষকে ধরে নিয়ে মাগুরা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে হত্যা করে ফেলে রাখা হচ্ছে। আবার যশোরের মানুষকে তুলে এনে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে হত্যা করা হচ্ছে। এমনকি বাইরে থেকে ঝিনাইদহে এনে হত্যা করা ৬ জনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। এসব বিষয়ে ঝিনাইদহ পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ বলেন, এসব হত্যার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সুনির্দিষ্ট ভাবে কোনো অভিযোগ করছে না। তাছাড়া, বিভিন্ন সময় ডিবি বা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখছি। আসলে কারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
গ্রামবাসী জানায়, সকাল ৭টার দিকে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে অল্প বয়সী এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। সোহানের খালাতো ভগ্নিপতি কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদারপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থলে এসে লাশটি তার শ্যালকের বলে শনাক্ত করেন। আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত ১০ই এপ্রিল বিকাল ৫টার দিকে ঈশ্বরবা জামতলা নামক স্থানে তার মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিল সোহান। এ সময় নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চারজন লোক ইজিবাইকে করে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায়। সেই থেকে সোহান নিখোঁজ ছিল। সোহানূর রহমানের মা পারভীন বেগম জানান, সোহান কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে পড়ালেখা করে। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৩১ পেয়ে কালীগঞ্জ শহরের শহিদ নূর আলী কলেজে ভর্তি হয়েছিল। তার প্রশ্ন- কি অপরাধ ছিল আমার সোহানের? পুলিশ পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে কেন তাকে হত্যা করা হলো? জানা গেছে, সোহানূর রহমানের বাবা ঢাকায় থাকেন। তারা দুই ভাই ও এক বোন। মাকে এগিয়ে নিতে ঈশ্বরবা জামতলা নামক স্থানে সোহানের সঙ্গে চার বছর বয়সী ছোট বোন মাসুমা আসেন। ছোট বোনের সামনেই বড় ভাইকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মাসুমা বাড়ি গিয়ে সংবাদটি পৌঁছে দেয়। সোহানের সন্ধানের দাবিতে গত ১৭ই এপ্রিল ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সোহানের পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে সোহানের বাবা বলেছিলেন, আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। ছেলের সন্ধানে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে আমি ক্লান্ত। সবাই আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। সোহানের নিখোঁজ থাকার বিষয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলে আসছেন এ ঘটনার সঙ্গে পুলিশ জড়িত নয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানা যায়নি। দুর্বৃত্তরা সোহান নামে এক কলেজছাত্রকে হত্যা করে চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে লাশ ফেলে রেখে গেছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে সোহানের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়ি পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। মা-বাবা, ছোট দুই ভাইবোন বুক চাপড়ে কাঁদতে থাকেন। আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী ও সোহানের স্কুল-কলেজের বন্ধুরাও সোহানের লাশ দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। এদিকে ঝিনাইদহ জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে এখন সাদা পোশাকের লোকজনের আতঙ্কে ভুগছে মানুষ। পুলিশ বা ডিবি পরিচয়ে লোকজন তুলে নিয়ে যাওয়ার পর লাশ মিলছে। কিন্তু কোনো কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে তাদের কোনো সদস্য এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। ফলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ২৭ জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে লাশ পাওয়া গেছে ২৪ জনের। বাকি তিনজন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর ও রাজনৈতিক দলের দাবি মতে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ৩ জন বিএনপি, ৬ জন জামায়াত-শিবির, ১ জন আওয়ামী লীগের কর্মী নিহত হয়েছেন। বাকি ১৪ জনের বিরুদ্ধে চরমপন্থি ও সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সময় বিশেষ কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। ঝিনাইদহের মানুষকে ধরে নিয়ে মাগুরা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে হত্যা করে ফেলে রাখা হচ্ছে। আবার যশোরের মানুষকে তুলে এনে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে হত্যা করা হচ্ছে। এমনকি বাইরে থেকে ঝিনাইদহে এনে হত্যা করা ৬ জনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। এসব বিষয়ে ঝিনাইদহ পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ বলেন, এসব হত্যার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সুনির্দিষ্ট ভাবে কোনো অভিযোগ করছে না। তাছাড়া, বিভিন্ন সময় ডিবি বা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখছি। আসলে কারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত।