সোহাগী জাহান তনু হত্যা পর ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে ডাক্তার হত্যা বা ধর্ষনের কোন আলামত পাননি। মৃত্যুর কারণ অজ্ঞাত উল্লেখ করে দেয়া হয়েছিল মৃত্যু সনদ। প্রাথমিকভাবে সুরতহাল রিপোর্টেও পুলিশ তেমন কিছু পায় নি। কিন্তু এখন সিআইডি ও পুন:ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বলছে, তনু হত্যায় তিন জন জড়িত ছিলেন। একাধিক ব্যাক্তি উপস্থিত ছিলেন। তার দেহে একাধিক ব্যাক্তির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাহলে প্রথম রিপোর্ট মিথ্যা হয়েছিল কেন? কারা করিয়েছিলেন? তাদের ধরতে পারলেই তনু হত্যাকারী পাওয়া সহজ হতে পারে। সুতরায় তনু হত্যার পর প্রকৃত ঘটনা আঁড়াল করতে যে সকল মিথ্যা রিপোর্ট হয়েছিল, সেবার দায়িত্বপ্রাপ্ত আমাদের কর্মচারীরা যে সেবা করেছিলেন ওই ধরণের মরনোত্তর সেবার আমাদের দরকার নেই।
কোন নারীকে ধর্ষন করে হত্যা করার পর পুলিশ ও ডাক্তার যদি এমন রিপোর্ট দেয় তবে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে তদন্ত সংস্থার উপর কি ভাবে নির্ভর করা যায়? একটি ন্যায় বিচারের জন্য সবচেয়ে প্রধান বিষয় সুষ্ঠু তদন্ত। তদন্ত যদি এই রকম হয় তবে আমাদের ন্যায় বিচার প্রাপ্তীর ভবিষৎ কি? এমনো দেখা যায়, কোন মামলা বা অভিযোগের বাদী বিাবাদী ও স্বাক্ষী সবই পুলিশ। তাহলে ওই ক্ষেত্রে ন্যায় পাওয়ার সম্ভাবনা কোথায়? আমাদের টাকায় বেতনভোগী কর্মচারী পুলিশ যদি সেবা করার অংশ হিসেবে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে আমাদের মেরে ফেলে তবে এই সেবার দরকার কি? তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশ যদি ঘুষকে বাটখাড়া হিসেবে ব্যবহার করে তবে সেটাকে কোন সেবা বলা যাবে? যে টাকা বেশী দিবেন তার বক্তব্য সঠিক মনে করে যদি তদন্ত হয় তবে ন্যায় যাবে কোথায়! এই ধরণের সেবার নাম কি তাহলে মরণ সেবা!
জাতির প্রত্যাশা, কোন অপরাধের তদন্ত নিরপেক্ষ করতে সরকারের উচিত সঠিক তদন্তের ব্যবস্থা করা। না হয় ভুল তদন্তে বিচারও ভুল হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার বঞ্চিতদের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও পরতে পারেন। কারণ আমাদের দেশে রাজনীতি বলতেই মামলা মোকদ্দমাকে বুঝায়। আজ যিনি প্রধানমন্ত্রী তিনিও একাধিক মামলার আসামী ছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতিও আসামী আছেন। সুতরাং তনুর ক্ষেত্রে কথিত তদন্ত ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রথমে ভুল কেন হয়েছিল তার কারণ উদঘাটন জরুরী । সঙ্গে সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থার অনুসন্ধান ও জরুরী হয়ে গেছে। না হলে সকলকেই তনুর মত মৃত্যুর পরও কঠিন পরিণতির মধ্যে পরতে হবে। ন্যায় বিচারের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতেই হবে।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম