ইউপি নির্বাচন: গাজীপুরে তিনটি উপজেলার নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় প্রার্থীরা

Slider জাতীয়

UP_nirbachan-201620160322131059

 

 

 

 

 

মো:আলী আজগর খান পিরু:
গাজীপুরে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবার অংশ নিয়েছে গাজীপুর সদর, কাপাসিয়া, শ্রীপুরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনকে ঘিরে নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জোর প্রচাণনা চালাচ্ছেন চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থীরা। গত ৭ই মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামি ২৩ এপ্রিল। আর এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিটি উপজেলার ভোটারদের মাঝে একদিকে বইছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ; অপরদিকে এ নিয়ে ভোটারদের মাঝে চলছে দারুন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতংক।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভোটরদের দাবি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। যাতে তারা নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। এ নিয়েও ভোটারদের মাঝে চলছে দারুণ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতংক। কারণ ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত হওয়া বিভিন্ন স্থানে ইউপি নির্বাচনের কারচুপি ও সহিংসতা হয়েছে। একই অবস্থা পুনরাবৃত্তি ঘটবে কিনা তা নিয়ে সংশয় ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন ভোটাররা।
ইত্যেমধ্যে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত অবধি পর্যন্ত ভোট প্রার্থনায় কর্মীসভা, উঠান বৈঠকের পাশাপাশি গণসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁরা ভোটারদের মন আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। এছাড়া এলাকার উন্নয়ন মূল কর্মকা-ে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এবার চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দলীয় প্রতীকে এবং ব্যক্তি ইমেজে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন।
গাজীপুর সদর:
গাজীপুর সদরের বাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৫ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান খান (নৌকা), বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি এড. সোলায়মান মোল্লা (ধানের শীষ) এবং আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ওই ইউনিয়নের ৫ বার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান শুকুর (আনারস) ও প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেন (মোটর সাইকেল)।
স্থানীয় ভোটারদের অভিমত মূলত বড় দুই দলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখি লড়াই হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছেন ভোটাররা।
বাড়ীয়া ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২৬ হাজার ১১৯ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৩৮৬ জন এবং মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৩৩৩ জন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু করতে আমরা সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি। কোন প্রকার নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাপাসিয়া উপজেলা:
কাপাসিয়া উপজেলার ১১ ইউনিয়নে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর চেয়ারম্যান পদে ৫৫, সাধারণ সদস্য পদে ৪১০ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে সনমানিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে খলিলুর রহমান মোল্লা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কাপাসিয়া উপজেলা দলীয় কোন্দলের কারণে ৫টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী এবং দলীয় মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ থাকায় কিছুটা বেকায়দায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু আওয়ামী লীগের উপজেলা থেকে গ্রাম পর্যন্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল ও মজবুত থাকায় ১১ ইউনিয়নেই জয় পেতে মরিয়া দলটি। অপরদিকে বিএনপিরও ৫টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় এবং দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বিএনপি। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদের প্রার্থীরা ১১টি ইউনিয়নেই পোস্টার, লিফলেট, স্টিকারসহ গণসংযোগ শুরু করেছেন।
সিংহশ্রী ইউনিয়ন: ১০টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৮৩৫৬ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম কাঁইয়া (নৌকা), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরাফ উদ্দিন খান আলামিন (আনারস), বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া মানছুর (ধানের শীষ)।
রায়েদ ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৯৩০৪ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আবদুল হাই (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ওয়াজউদ্দিন মোল্লা (আনারস), বিএনপির প্রার্থী উপজেলা যুবদলে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম (লাঙ্গল)।
টোক ইউনিয়ন: ১৪টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৯৫১৫ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ জলিল (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শরীফ মো. ওয়াহীদ (আনারস), বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক কিরণ (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আতাউর রহমান বাদল ভূঁইয়া (চশমা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামসুদ্দিন (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলো- আবদুল বারি (ঘোড়া), একেএম জাহাঙ্গীর বিন ছায়েদ (মোটর সাইকেল) ও আ. সালাম (অটো রিকশা)।
বারিষাব ইউনিয়ন: ১৩টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ২৭,৫৬৫ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এসএম আতাউজ্জামান বাবলু (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মনোয়ার হোসেন আকন্দ (আনারস), বিএনপির প্রার্থী বারিষাব ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মৌলভী কফিল উদ্দিন (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী দবির উদ্দিন (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী তমিজ উদ্দিন (চশমা) ও মো. আরিফ মাহমুদ (মোটর সাইকেল)।
ঘাগটিয়া ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৮,৬৩৭ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক শাহীনূর আলম সেলিম (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন নান্নু (আনারস), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহিউদ্দিন ভূঁইয়া (হাতপাখা)।
সনমানিয়া ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২২,৭২৩ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাহাদত হোসেন মাস্টার (নৌকা), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আজহার চৌধুরী (মোটর সাইকেল), বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম (আনারস), জাতীয় পার্টির আলমগীর হোসেন বিপ্লব (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন- শেখ নূর মোহাম্মদ জীবন (টেবিল ফ্যান) ও তোফাজ্জল হোসেন (চশমা)। কড়িহাতা ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৭৩১৩ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম মোড়ল (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাড. আসলাম হোসেন (আনারস), বিএনপির প্রার্থী উপজেলা যুবদল নেতা হারুন আর রশিদ (ধানের শীষ), বিএপির বিদ্রোহী প্রার্থী ইসাহাক হোসেন শাহীন (মোটর সাইকেল), জাতীয় পার্টির জাহাঙ্গীর আলম (লাঙ্গল), গণতন্ত্রী পার্টির শারফুদ্দিন (কবুতর), জাসদের বজলুর রশিদ (মশাল)।
তরগাঁও ইউনিয়ন: ১১টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৪,১১৮ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আইবুর রহমান সিকদার (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আলী হোসেন চৌধুরী (আনারস), জাতীয় পার্টির প্রার্থী জোবায়ের হোসেন (লাঙ্গল)।
কাপাসিয়া সদর ইউনিয়ন: ১৪টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩০,৮৪৩ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন প্রধান (নৌকা), স্বতস্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক (বহিষ্কৃত) সাধারণ সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলাম (আসারস), বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আজগর হোসেন খান (ধানের শীষ), গণতন্ত্রী পার্টির আবদুর রাজ্জাক (কবুতর) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উবায়দুল হক (হাতপাখা)। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে সরাসরি লড়াই হবে।
চাঁদপুর ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৯,৯৪৯ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানূর রহমান মাস্টার (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মোড়ল (ধানের শীষ) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ফজলুল হক (হাতপাখা)।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন: ১০টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৫,২৬২ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ গাফ্ফার (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনুস আলী (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির সোলাইমান (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হারিছ উল হক (হাতপাখা)।
শ্রীপুর উপজেলা:
শ্রীপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইউনিয়নগুলো হলো মাওনা, গাজীপুর, তেলিহাটি, কাওরাইদ, বরমী, রাজাবাড়ী, গোসিংগা, প্রহলাদপুর পরিষদের। শ্রীপুরে সব ক’টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাইয়ে তরুণ প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উৎসাহের সৃষ্টি হলেও কয়েকটি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতরা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকায় তা এখন গলার কাটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ৮টি ইউনিয়নের অধিকাংশতে অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিতে না পারায় এখন অনেকটাই নৌকা ধানের শীষে লড়াই হতে যাচ্ছে।
মাওনা: ৩৫ হাজার ৯৬৪ জন ভোটার এই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসাবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন জাহাঙ্গীর অলম খোকন (নৌকা), বিএনপির মনোনীত চেয়ারম্যানে পদে মাঠ চষে বেড়াচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক (ধানের শীষ), এ ছাড়াও স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মোক্তারুল করিম মোড়ল শামীম (মোটর সাইকেল)। এই ইউনিয়নে ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৫ জন প্রার্থী ছাড়াও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গাজীপুর: ৩৫ হাজার ৯৩৬জন ভোটার এই ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী নূরুল ইসলাম (নৌকা) থাকলেও বিএনপি’র ৩ জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়ে মাঠে রয়েছেন কাশেম বেপারী (ধানের শীষ), দলের মনোনয়ন বঞ্চিত বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন (মোটরসাইকেল) ও সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হাসেম (আনারস)। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ৩৮ জন ছাড়াও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তেলিহাটি:- ৩৭হাজার ৮২৫ জন ভোটার এই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান আঃ বাতেন সরকার (নৌকা), বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়ে মাঠে রয়েছেন আক্তারুল আলম মাস্টার (ধানের শীষ)। এছাড়াও ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৪৩ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কাওরাইদ: ৩৫ হাজার ৪৮৬ জন ভোটার এলাকা নিয়ে গড়া এই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ম-ল (নৌকা), বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়ে মাঠে রয়েছেন রাশেদ ম-ল (ধানের শীষ) ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আঃ হাই (আনারস) ও কামরুল হক (মোটর সাইকেল) স্বতন্ত্রের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৩৭ জনসহ সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে প্রার্থী আছেন ৯ জন।
বরমী: উপজেলার সবচেয়ে বেশি ৪৪হাজার ৭৩৯ জন ভোটার সমৃদ্ধ এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের শামসুল হক সরকার ওরফে বাদল সরকার (নৌকা), বিএনপি মনোনীত আক্তারুজ্জামান (ধানের শীষ) ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে অংশ নিচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক (মোটর সাইকেল)। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৫৩ জন ছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১০জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গোসিংগা: ২৪হাজার ৫৬৮জন ভোটার এলাকা এই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের শাহজাহান সরকার (নৌকা) ও বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার মোঃ আসাদুজ্জামান (ধানের শীষ) ও ইসলামী আন্দোলনের লেহাজ উদ্দিন সরকার (হাত পাখা) ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন বরকত আলী খোকা (আনারস) ও বিএম নজরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল)। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৪৪ জন ছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থী হিসাবে অংশ নিচ্ছেন ৮জন।
রাজাবাড়ী: ৩২ হাজার ৯৭১জন ভোটার নিয়ে এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ফারুক হোসেন (নৌকা), বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির শাহ আলম (লাঙ্গল) ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সরকার (আনারস), আলাউদ্দিন (অটোরিক্সা), লিয়াকত আলী খান (চশমা) ও মাইদুর রহমান খান সজিব (মোটর সাইকেল)। সাধারণ ৯টি ওয়ার্ড সদস্য পদে ৪৬ জন ছাড়াও সংরক্ষিত ওর্য়াড সদস্য পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রহলাদপুর: ২০হাজার ৩৫৯ জন ভোটার এই ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের নুরুল হক আকন্দ (নৌকা), বিএনপির আবু ছাইদ আকন্দ (ধানের শীষ), জাসদের হাজ্বী সামসুদ্দিন সরকার (মশাল) ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে অংশ নিচ্ছেন ফরহাদ হোসেন (মোটর সাইকেল) ও জাহাঙ্গীর হোসেন (আনারস)। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৩ জন ছাড়াও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, ৮টি ইউনিয়নে ১১৩টি কেন্দ্রে ও ৬৫০টি কক্ষের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। এর জন্য ১১৩ জন প্রিজাইডিং অফিসার ও ৬৫০ জন সহকারী প্রিজাইডিং সহ ১৩’শ পোলিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। ৮টি ইউনিয়নে পুরুষ ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৮৩৬ জন ও মহিলা ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ১২জনসহ সর্বমোট ভোটার রয়েছে ২ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮৪৮ জন।

ইউপি নির্বাচন:
গাজীপুরে তিনটি উপজেলার নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় প্রার্থীরা
মো:আলী আজগর খান পিরু:
গাজীপুরে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবার অংশ নিয়েছে গাজীপুর সদর, কাপাসিয়া, শ্রীপুরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনকে ঘিরে নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জোর প্রচাণনা চালাচ্ছেন চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থীরা। গত ৭ই মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামি ২৩ এপ্রিল। আর এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিটি উপজেলার ভোটারদের মাঝে একদিকে বইছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ; অপরদিকে এ নিয়ে ভোটারদের মাঝে চলছে দারুন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতংক।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভোটরদের দাবি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। যাতে তারা নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। এ নিয়েও ভোটারদের মাঝে চলছে দারুণ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতংক। কারণ ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত হওয়া বিভিন্ন স্থানে ইউপি নির্বাচনের কারচুপি ও সহিংসতা হয়েছে। একই অবস্থা পুনরাবৃত্তি ঘটবে কিনা তা নিয়ে সংশয় ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন ভোটাররা।
ইত্যেমধ্যে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত অবধি পর্যন্ত ভোট প্রার্থনায় কর্মীসভা, উঠান বৈঠকের পাশাপাশি গণসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁরা ভোটারদের মন আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। এছাড়া এলাকার উন্নয়ন মূল কর্মকা-ে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এবার চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দলীয় প্রতীকে এবং ব্যক্তি ইমেজে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন।
গাজীপুর সদর:
গাজীপুর সদরের বাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৫ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান খান (নৌকা), বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি এড. সোলায়মান মোল্লা (ধানের শীষ) এবং আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ওই ইউনিয়নের ৫ বার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান শুকুর (আনারস) ও প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেন (মোটর সাইকেল)।
স্থানীয় ভোটারদের অভিমত মূলত বড় দুই দলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখি লড়াই হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছেন ভোটাররা।
বাড়ীয়া ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২৬ হাজার ১১৯ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৩৮৬ জন এবং মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৩৩৩ জন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু করতে আমরা সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি। কোন প্রকার নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাপাসিয়া উপজেলা:
কাপাসিয়া উপজেলার ১১ ইউনিয়নে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর চেয়ারম্যান পদে ৫৫, সাধারণ সদস্য পদে ৪১০ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে সনমানিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে খলিলুর রহমান মোল্লা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কাপাসিয়া উপজেলা দলীয় কোন্দলের কারণে ৫টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী এবং দলীয় মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ থাকায় কিছুটা বেকায়দায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু আওয়ামী লীগের উপজেলা থেকে গ্রাম পর্যন্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল ও মজবুত থাকায় ১১ ইউনিয়নেই জয় পেতে মরিয়া দলটি। অপরদিকে বিএনপিরও ৫টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় এবং দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বিএনপি। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদের প্রার্থীরা ১১টি ইউনিয়নেই পোস্টার, লিফলেট, স্টিকারসহ গণসংযোগ শুরু করেছেন।
সিংহশ্রী ইউনিয়ন: ১০টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৮৩৫৬ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম কাঁইয়া (নৌকা), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরাফ উদ্দিন খান আলামিন (আনারস), বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া মানছুর (ধানের শীষ)।
রায়েদ ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৯৩০৪ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আবদুল হাই (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ওয়াজউদ্দিন মোল্লা (আনারস), বিএনপির প্রার্থী উপজেলা যুবদলে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম (লাঙ্গল)।
টোক ইউনিয়ন: ১৪টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৯৫১৫ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ জলিল (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শরীফ মো. ওয়াহীদ (আনারস), বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক কিরণ (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আতাউর রহমান বাদল ভূঁইয়া (চশমা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামসুদ্দিন (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলো- আবদুল বারি (ঘোড়া), একেএম জাহাঙ্গীর বিন ছায়েদ (মোটর সাইকেল) ও আ. সালাম (অটো রিকশা)।
বারিষাব ইউনিয়ন: ১৩টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ২৭,৫৬৫ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এসএম আতাউজ্জামান বাবলু (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মনোয়ার হোসেন আকন্দ (আনারস), বিএনপির প্রার্থী বারিষাব ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মৌলভী কফিল উদ্দিন (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী দবির উদ্দিন (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী তমিজ উদ্দিন (চশমা) ও মো. আরিফ মাহমুদ (মোটর সাইকেল)।
ঘাগটিয়া ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৮,৬৩৭ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক শাহীনূর আলম সেলিম (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন নান্নু (আনারস), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহিউদ্দিন ভূঁইয়া (হাতপাখা)।
সনমানিয়া ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২২,৭২৩ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাহাদত হোসেন মাস্টার (নৌকা), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আজহার চৌধুরী (মোটর সাইকেল), বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম (আনারস), জাতীয় পার্টির আলমগীর হোসেন বিপ্লব (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন- শেখ নূর মোহাম্মদ জীবন (টেবিল ফ্যান) ও তোফাজ্জল হোসেন (চশমা)। কড়িহাতা ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৭৩১৩ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম মোড়ল (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাড. আসলাম হোসেন (আনারস), বিএনপির প্রার্থী উপজেলা যুবদল নেতা হারুন আর রশিদ (ধানের শীষ), বিএপির বিদ্রোহী প্রার্থী ইসাহাক হোসেন শাহীন (মোটর সাইকেল), জাতীয় পার্টির জাহাঙ্গীর আলম (লাঙ্গল), গণতন্ত্রী পার্টির শারফুদ্দিন (কবুতর), জাসদের বজলুর রশিদ (মশাল)।
তরগাঁও ইউনিয়ন: ১১টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৪,১১৮ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আইবুর রহমান সিকদার (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আলী হোসেন চৌধুরী (আনারস), জাতীয় পার্টির প্রার্থী জোবায়ের হোসেন (লাঙ্গল)।
কাপাসিয়া সদর ইউনিয়ন: ১৪টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩০,৮৪৩ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন প্রধান (নৌকা), স্বতস্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক (বহিষ্কৃত) সাধারণ সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলাম (আসারস), বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আজগর হোসেন খান (ধানের শীষ), গণতন্ত্রী পার্টির আবদুর রাজ্জাক (কবুতর) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উবায়দুল হক (হাতপাখা)। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে সরাসরি লড়াই হবে।
চাঁদপুর ইউনিয়ন: ৯টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৯,৯৪৯ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানূর রহমান মাস্টার (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মোড়ল (ধানের শীষ) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ফজলুল হক (হাতপাখা)।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন: ১০টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৫,২৬২ জন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ গাফ্ফার (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনুস আলী (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির সোলাইমান (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হারিছ উল হক (হাতপাখা)।
শ্রীপুর উপজেলা:
শ্রীপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইউনিয়নগুলো হলো মাওনা, গাজীপুর, তেলিহাটি, কাওরাইদ, বরমী, রাজাবাড়ী, গোসিংগা, প্রহলাদপুর পরিষদের। শ্রীপুরে সব ক’টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাইয়ে তরুণ প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উৎসাহের সৃষ্টি হলেও কয়েকটি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতরা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকায় তা এখন গলার কাটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ৮টি ইউনিয়নের অধিকাংশতে অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিতে না পারায় এখন অনেকটাই নৌকা ধানের শীষে লড়াই হতে যাচ্ছে।
মাওনা: ৩৫ হাজার ৯৬৪ জন ভোটার এই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসাবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন জাহাঙ্গীর অলম খোকন (নৌকা), বিএনপির মনোনীত চেয়ারম্যানে পদে মাঠ চষে বেড়াচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক (ধানের শীষ), এ ছাড়াও স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মোক্তারুল করিম মোড়ল শামীম (মোটর সাইকেল)। এই ইউনিয়নে ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৫ জন প্রার্থী ছাড়াও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গাজীপুর: ৩৫ হাজার ৯৩৬জন ভোটার এই ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী নূরুল ইসলাম (নৌকা) থাকলেও বিএনপি’র ৩ জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়ে মাঠে রয়েছেন কাশেম বেপারী (ধানের শীষ), দলের মনোনয়ন বঞ্চিত বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন (মোটরসাইকেল) ও সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হাসেম (আনারস)। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ৩৮ জন ছাড়াও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তেলিহাটি:- ৩৭হাজার ৮২৫ জন ভোটার এই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান আঃ বাতেন সরকার (নৌকা), বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়ে মাঠে রয়েছেন আক্তারুল আলম মাস্টার (ধানের শীষ)। এছাড়াও ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৪৩ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কাওরাইদ: ৩৫ হাজার ৪৮৬ জন ভোটার এলাকা নিয়ে গড়া এই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ম-ল (নৌকা), বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়ে মাঠে রয়েছেন রাশেদ ম-ল (ধানের শীষ) ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আঃ হাই (আনারস) ও কামরুল হক (মোটর সাইকেল) স্বতন্ত্রের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৩৭ জনসহ সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে প্রার্থী আছেন ৯ জন।
বরমী: উপজেলার সবচেয়ে বেশি ৪৪হাজার ৭৩৯ জন ভোটার সমৃদ্ধ এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের শামসুল হক সরকার ওরফে বাদল সরকার (নৌকা), বিএনপি মনোনীত আক্তারুজ্জামান (ধানের শীষ) ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে অংশ নিচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক (মোটর সাইকেল)। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৫৩ জন ছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১০জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গোসিংগা: ২৪হাজার ৫৬৮জন ভোটার এলাকা এই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের শাহজাহান সরকার (নৌকা) ও বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার মোঃ আসাদুজ্জামান (ধানের শীষ) ও ইসলামী আন্দোলনের লেহাজ উদ্দিন সরকার (হাত পাখা) ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন বরকত আলী খোকা (আনারস) ও বিএম নজরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল)। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৪৪ জন ছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থী হিসাবে অংশ নিচ্ছেন ৮জন।
রাজাবাড়ী: ৩২ হাজার ৯৭১জন ভোটার নিয়ে এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ফারুক হোসেন (নৌকা), বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির শাহ আলম (লাঙ্গল) ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সরকার (আনারস), আলাউদ্দিন (অটোরিক্সা), লিয়াকত আলী খান (চশমা) ও মাইদুর রহমান খান সজিব (মোটর সাইকেল)। সাধারণ ৯টি ওয়ার্ড সদস্য পদে ৪৬ জন ছাড়াও সংরক্ষিত ওর্য়াড সদস্য পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রহলাদপুর: ২০হাজার ৩৫৯ জন ভোটার এই ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের নুরুল হক আকন্দ (নৌকা), বিএনপির আবু ছাইদ আকন্দ (ধানের শীষ), জাসদের হাজ্বী সামসুদ্দিন সরকার (মশাল) ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে অংশ নিচ্ছেন ফরহাদ হোসেন (মোটর সাইকেল) ও জাহাঙ্গীর হোসেন (আনারস)। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৩ জন ছাড়াও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, ৮টি ইউনিয়নে ১১৩টি কেন্দ্রে ও ৬৫০টি কক্ষের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। এর জন্য ১১৩ জন প্রিজাইডিং অফিসার ও ৬৫০ জন সহকারী প্রিজাইডিং সহ ১৩’শ পোলিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। ৮টি ইউনিয়নে পুরুষ ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৮৩৬ জন ও মহিলা ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ১২জনসহ সর্বমোট ভোটার রয়েছে ২ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮৪৮ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *