ঢাকা: দেড় বছরের আলভিনা। বাবা সোহানের মোটরসাইকেল আর মা হুমাইরার কোলে চড়ে হাতিরঝিলে। বাবা-মায়ের সঙ্গে আলভিনারও বৈশাখী সাজ!
চার বছরের শিশু সোহরাবও পড়েছে লাল পাঞ্জাবি, সাদা পায়জামা। মা, দাদি, দাদা আর ফুপুর সঙ্গে এসেছে হাতিরঝিলে। এতো লোক সমাগম দেখে হতভম্ব সোহরাব।
আলভিনা আর সোহরাবের মতো শত শত শিশু মা-বাবার সঙ্গে নববর্ষে হাতিরঝিলে এসেছে। বাঁশির সুর আর ঢোলের তালে মেতে উঠেছে শিশুরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর গড়িয়ে সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাল, সাদা পোশাকে শত শত মানুষের ঢল নামে হাতিরঝিলে।
দক্ষিণা বাতাসে ঝিলের দোল। স্বামী-স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, পরিবারের সব সদস্য, বন্ধুরা বৈশাখী সাজে বেড়াতে আসে হাতিরঝিল এলাকায়। দিন ও স্থানকে স্মরণী করে রাখতে বেশিরভাগই মেতে ওঠে সেলফি তোলায়। অনেকে ব্যস্ত সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করায়।
আলভিনার বাবা সোহান বলেন, আলভিনা এখনো জানে না বৈশাখী সাজ কী। সেলফি তুলে রাখলাম, একদিন সে বড় হলে বলতে পারবো এ বৈশাখের কথা।
সোহরাবের মা মহিমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, সোহরাবের বায়না মেটাতে বৈশাখে হাতিরঝিলে আসা। এতো সাজ দেখে সোরবারের প্রশ্ন, আজ ঈদ নাকি?
একই রকম পোশাকে মহাখালী থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুজন, আবির, সুমন আর ইমরান এসেছেন হাতিরঝিলে ঘুরতে। চার বন্ধু ব্যস্ত সেলফি তোলায়।
তারা বলেন, বৈশাখ মানে বাঙালি সংস্কৃতিকে মনে করা। তীব্র গরম উপেক্ষা করে সকাল থেকে হাতিরঝিলে ঘুরছি। মানুষের বৈশাখী সাজ আর প্রচণ্ড বাতাস দেখে ভালো লাগছে।
শ্যামলী থেকে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে হাতিরঝিলের পুলিশ প্লাজা কনকর্ড এলাকায় এসেছেন সরকারি চাকরে আমিনুর রহমান শিমুল।
তিনি বলেন, দিনটি হয়তো আর পাবো না। হাতিরঝিলের মনোরম দৃশ্য দেখতে বৈশাখের এমন দিনে সবাইকে নিয়ে এসেছি।
দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ঝিলের ধারে ঘাসে বসে অনেককেই পান্তা ভাত, শুকনো মরিচ ও বিভিন্ন ধরনের ভর্তা খেতে দেখা গেছে।
পুরো হাতিরঝিল ঘুরে দেখতে আসা মানুষ মেতেছিল ট্যুরিস্ট বাসে। দুপুরের পর থেকে দম ফেলার ফুসরত ছিল না বাসের।
হাতিরঝিলে বৈশাখী মানুষের ঢলে বিক্রি হচ্ছে বাঁশি, খেলনা। তীব্র গরমে জুস, কোমল পানীয়, আইসক্রিম বিক্রি হয়েছে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে তৎপর থাকতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।