ঢাকা: বর্তমান ফুটবল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় কে? উত্তরে সবাই হয়তো সমস্বরেই বলে উঠবেন লিওনেল মেসি। কেউবা বলবেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম। আবার অনেকেই আছেন যারা নেইমারকে আগামীর বিশ্বসেরা হিসেবে দেখছেন। এ তিনজনকেই বর্তমান প্রজন্মের সেরা হিসেবে মানছেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবল গ্রেট পেলে।
শুধু তাই নয়, নিজের খেলোয়াড়ী জীবনে বিশ্বমানের প্রতিভাধর খেলোয়াড়দের তুলনা টেনে আনেন তিনবারের বিশ্বকাপ জয়ী। পেলের দৃষ্টিতে, বর্তমান মডার্ন ফুটবলে সেরা খেলোয়াড় আছেন কেবল তিনজন (মেসি-নেইমার-রোনালদো)।
সবশেষ ফিফা বর্ষসেরা হওয়ার দৌড়ে সেরা তিনে ছিলেন মেসি, রোনালদো ও নেইমার। ক্লাব সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন ও সিআর সেভেনকে পেছনে ফেলে পঞ্চমবারের মতো ব্যালন ডি’অর ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন আর্জেন্টাইন আইকন।
‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের খেলোয়াড়ী জীবনের সময়কালে ইংলিশ ফুটবলের মান নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা ঝড়ে পেলের কণ্ঠে, ‘আমার স্মৃতিতে আছেন ববি চার্লটন, ববি মুর এবং গর্ডন ব্যাংকসের (কিংবদন্তি ইংলিশ গোলরক্ষক) কথা ভুলব না, তিনি ছিলেন সত্যিকারের গ্রেট। এটা শুধুমাত্র ইংল্যান্ডেই ছিল। বিশ্বের সব জায়গায় ছিল একই রকম, ব্রিলিয়ান্ট জার্মানস, ডাচম্যান এবং অবশ্যই ব্রাজিলিয়ানস।’
কিন্তু পেলের বিশ্বাস, তার সময়ের ওয়ার্ল্ড-ক্লাস ট্যালেন্টের যে গভীরতা ছিল এর সঙ্গে বর্তমান যুগের ফুটবল মিলবে না, ‘বর্তমান ফুটবল বিশ্বে কেবল তিনজন গ্রেট খেলোয়াড় আছে, মেসি, রোনালদো ও নেইমার…সম্ভবত। কিন্তু ওই সময়ে (পেলে যুগে) ছিল অনেক।’
প্রতিভাধর ফুটবলারের অভাবের পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে খেলোয়াড়দের এজেন্টদের উপস্থিতিতে দায়ী করছেন পেলে। ব্যক্তিগত ম্যানেজার ও এজেন্টরা তাদের ক্লাইন্টদের প্রস্তুত হওয়ার আগেই বড় অঙ্কের আর্থিক চুক্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। এতে কিছু উজ্জ্বল প্রতিভাবান তাদের সম্ভাব্য গন্তব্যে পৌছার আগেই দিক হারিয়ে ফেলে। বলা যায়, এসবের মধ্য দিয়ে উদীয়মান তারকাদের উন্নতিকেই বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে!
এ ব্যাপারে পেলের ভাষ্য, ‘আমি মনে করি, অন্যতম সমস্যা হচ্ছে, খেলোয়াড়রা যে দেশে জন্ম নেয় সেখানকার টিমে (ক্লাব) দীর্ঘদিন ধরে খেলছে। কোনো ক্লাবে যোগ দেওয়ার আগে তারা নিজ দেশে বেড়ে উঠার সুযোগ পায়। বর্তমানে ফুটবলাররা ব্যবসায়ী (ক্লাবের মালিক), এজেন্ট, ব্যক্তিগত ম্যানেজারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।’
‘ব্রাজিলেও আমাদের এই সমস্যাটা আছে। সেরা খেলোয়াড়রা খেলা শুরু করে, এরপর অচিরেই বড় কোনো ক্লাবের আওতায় চলে আসে। এরা পারিশ্রমিক হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ দেয় এবং খেলোয়াড়রাও অল্পতেই অধিক অর্থ উপার্জনের আশায় থাকে, তারা (এজেন্ট) এদেরকে খুব তাড়াতাড়ি তাগিদ দেয়। উদীয়মান ফুটবলাররা নিজেদের উন্নতির জন্য পর্যাপ্ত সময়ও পায় না।’-যোগ করেন পেলে।