ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র নির্বাচন কার্যালয় থেকে ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজির হোসেন মিয়া ও মনোহরগঞ্জ থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাদেকুর রহমান এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রলীগ নেতার নাম এসএম নোমান (২৮)। বাড়ি উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নে। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজির হোসেন মিয়ার ভাষ্য, গতকাল মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। মনোনয়নপত্র জমা শেষে রাতে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে দাপ্তরিক কাজ চলছিল। দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে সেখানে আসেন নোমান। তিনি তাঁর ইউনিয়নের প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁকে আটক করে পুলিশ।
মনোহরগঞ্জ থানা-পুলিশ জানায়, আটকের পর নিরাপত্তার কারণে নোমানকে দিবাগত রাত দুইটার দিকে লাকসাম থানার পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, নোমানকে ছাড়িয়ে নিতে রাতভর তৎপরতা চলে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে অন্য থানায় পাঠানো হয়।
মনোহরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাদেকুর রহমান বলেন, আজ শুক্রবার সকালে নোমানের বিরুদ্ধে তাঁর থানায় মামলা হয়েছে। মামলার বাদী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজির হোসেন মিয়া। নোমানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নোমানকে লাকসাম থানা থেকে কুমিল্লায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।
রাতে নোমান আটক হওয়ার পর ঘটনার বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানার চেষ্টা করেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা। তবে ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব বলেন, কোনো ব্যক্তির অপরাধ-কর্মের দায়ভার ছাত্রলীগ নেবে না। কেউ কোনো অন্য করলে আইন অনুসারে তাঁর বিচার হওয়া উচিত।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সদস্য আফরোজা কুসুমের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় গতকাল দিনভর প্রতিপক্ষের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বাধা দিয়েছেন নোমান ও তাঁর লোকজন। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনে তাঁদের এই তৎপরতা চলে। অনেক প্রার্থী ভয়ে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। পরে বাধ্য হয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে।