জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদকে হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পৃথক বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও লেখকদের সংগঠন পেন আমেরিকা।
অ্যামনেস্টির বিবৃতি
বাংলাদেশে একের পর এক ব্লগার হত্যার ঘটনাকে স্বাধীন মত প্রকাশের ওপর নির্বিচার আঘাত হিসেবে উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও মুক্তচিন্তক নাজিমুদ্দিনকে নৃশংস উপায়ে হত্যার ঘটনা আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় যে মানুষের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার রক্ষায় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হচ্ছে।
অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৫ সালে কমপক্ষে চারজন ব্লগার ও একজন প্রকাশককে হত্যা করা হয়েছে কেবল তাঁদের ধর্মনিরপেক্ষ মতামত ও লেখালেখির কারণে। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে এখনো বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এসব ঘটনার শক্তভাবে নিন্দা জানাতেও ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, উল্টো সরকারের পক্ষ থেকে ব্লগারদের প্রতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তাঁরা যেন তাঁদের লেখনীর মাধ্যমে কোনো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করেন। কয়েক ডজন ব্লগার জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কিংবা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পরিচালক চামপা প্যাটেল বলেন, ‘কোনো যুক্তিতেই নাজিমুদ্দিন হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দেওয়া যায় না। এটা কেবল বোধহীন হত্যাকাণ্ড নয়; এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নির্বিচার আঘাত। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই শক্তভাবে এসব ঘটনার নিন্দা জানাতে হবে এবং ধারাবাহিক এসব নৃশংস হত্যাকাণ্ড বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম দায়িত্বহীনতা এমন বার্তা দেবে যে এসব হত্যার ঘটনা গা সওয়া হয়ে গেছে এবং সরকার এসব ঘটনাকে অনুমোদন করছে।’
পেন আমেরিকার বিবৃতি
নাজিমুদ্দিনের হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশ সরকারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা উল্লেখ করে পেন আমেরিকার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ঘটনা মুক্তচিন্তার মানুষ যে ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে আছে, সেটাই নির্দেশ করে।
পেন আমেরিকার স্বাধীন মত প্রকাশবিষয়ক কর্মসূচির পরিচালক কারিন কার্লেকার বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ মত প্রকাশকারী ব্লগার ও লেখকেরা রক্তাক্ত হামলার শিকার হচ্ছেন। আমরা বাংলাদেশের পুলিশ ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, ঘটনার যথাযথ তদন্ত করার এবং এ ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়ার। একই সঙ্গে আমরা ঝুঁকিতে থাকা মুক্তচিন্তার মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানাই।’