জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রতীক নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসনে শুনানি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার ইসি সচিবালয়ের সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন এ শুনানি করে।
কাউন্সিলে দ্বিধাবিভক্ত সংগঠনটির দুই অংশই ইসির শুনানিতে নিজেদের মূল স্রোতধারা দাবি করে মশাল প্রতীক চেয়েছে।
বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রথমে শুনানি করেন জাসদের একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারসহ অন্য নেতারা।
ইসির শুনানি শেষে ইনু সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের শুনানিতে আহবান করেছিলো। এর আগে মঙ্গলবার আমরা আমাদের দলের কাউন্সিলের দলিলাদি ইসিতে হস্তান্তর করেছি। এ নিয়েই আজ কিছু প্রশ্নোত্তরও হয়েছে। ইসির প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে, আশা করি প্রতীক বিষয়ে তারা সুবিবেচনা করবে।
অধিকাংশই আমাদের সাথে : বাদল
১২ মার্চের কাউন্সিলের ইনু-শিরীনের কমিটি ‘অগণতান্ত্রিকভাবে’ গঠিত হয়েছে দাবি করে মইন উদ্দীন খান বাদল বলেছেন, দলের স্থায়ী কমিটি, জেলা কমিটি এবং সংসদীয় কমিটিতে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
তিনি ইসিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই রাতে দুটি পথ খোলা ছিল। হয় সংঘাত, না হয় পরিত্যাগ। অধিকাংশ কাউন্সিলর এ কমিটিতে পরিত্যাগ করেছে। জাসদের কাউন্সিলর ১২৩৬ জন, ওরা (ইনু-শিরীন) ভোট দেখিয়েছে ৬০৩ ভোট। বাকিরা গেল কোথায়? জাসদের ছয়জন এমপির চারজন (বাদল, লুৎফা তাহের, তানসেন ও প্রধান) আমাদের; স্থায়ী কমিটির ১২ জনের মধ্যে ৭ জন আমাদের, দেশের ৭৯টি কমিটির মধ্যে ৪০টি আমাদের।’
বাদল বলেন, ‘আমরাই জাসদের মূলধারা; মশাল প্রতীক আমাদের। সংসদে আমি, ইনু, শিরীন নৌকায় পার হয়েছি। মশাল প্রতীকে যে দুজন নির্বাচিত হয়েছেন, তারা আমাদের সাথে। যারা মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নিতে পারবেন না?’
মশাল নিয়ে ইসির সিদ্ধান্ত পক্ষে না গেলে আদালতে যাওয়ার আভাসও দেন তিনি। এসময় তার সাথে শরীফ নুরুল আম্বিয়া, নাজমুল হক প্রধানও ছিলেন।
সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে তিন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব শুনানি নেন।
ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।
গত ১২ মার্চ জাসদের কাউন্সিলে দুটি কমিটি গঠিত হয়। একটির সভাপতি মন্ত্রী ইনুর সাথে সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। অন্যটিতে সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান।
দলীয়ভাবে ইউপি নির্বাচনের চলার মধ্যে দলটিতে বিভেদ দেখা দিলে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। দুই কমিটি মশাল প্রতীকের প্রার্থী মনোনয়ন দিলে জটিলতা নিরসনে ইসি শুনানির উদ্যোগ নেয়।
জাসদের এই দুই অংশ যদি এক না হয়, তবে একটি পক্ষকে বৈধতা দিয়ে মশাল প্রতীক দিতে হবে ইসিকে। অন্য অংশ নতুন করে নিবন্ধন নিতে হবে, নিতে হবে নতুন প্রতীক।