মাদারীপুরে ইউপি নির্বাচনে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে গুলাগুলি সময় পুলিশের গুলিতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র সুজনের বিরুদ্ধে ব্যালট বাক্স চুরির অভিযোগ করে গুলি করার কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। তাহলে প্রশ্ন এসে যায় সুজনের বুকে ও পেটে দুটি গুলি করল কে? এই ধুম্রজালের বিষয়টি পরিস্কার করার দাবি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুই ঘন্টা সড়ক অবরোধ করেছে। একই সঙ্গে তনু হত্যাকারীদের বিচারও চেয়েছেন তারা। ওই দুই শিক্ষার্থী হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে তারা রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লােবের সামনে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
এই বিষয়ে গণমাধ্যমে অসংখ্য সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, ঢাবি ছাত্র সুজনের গায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম ছিল। তিনি ভোট কেন্দ্রের একটু দূরে ছিলেন। এলোমেলো গুলিতে তিনি আহত হন। ভোটের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, পুলিশের গুলিতেই সুজন মারা গেছেন। তাহলে পুলিশ কেন তাকে গুলি করল? ভোট ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ ঢাবি ছাত্রকে কেন হত্যা করল?
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ পর্যন্ত মোট ৩২ জন নীরিহ মানুষ খুন হয়েছেন। আহত ও ভোট পরবর্তি সময়ের সহিংসতায় নিহত হয়েছেন আরো ২জন। তাহলে ভোটের কারণে নিহতের সংখ্যা ৩৪ এ দাঁড়াল। কোন কোন মিডিয়া এই সংখ্যাটাকে ৪০ পর্যন্ত বলছে। তাহলে সহজেই প্রশ্ন এসে যায়, যে ভোট মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে খুন করে সে ভোটটার কেন এত দরকার হল? রাষ্ট্রের মালিক সাধারণ মানুষ তো ভোটের জন্য এখনো রাস্তায় নামেনি। সরকারের কেন এই ধরণের মরণ ভোটের দরকার পড়ল?
সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, ভোটের অধিকার যদি মৃত্যু হয় তাহলে ওই ভোট প্রয়োজন নেই। দুই ধাপের নির্বাচন বলে দিচ্ছে মোট ৬ ধাপ শেষ হলে লাশের মিছিল একশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। সুতরাং ভোটের নামে যদি ভোটারকে খুন হতে হয় তাহলে আর ভোটের দরকার নেই। সরকারের উচিত নির্বাচনী খুন বন্ধ করতে না পারলে নির্বাচনী তপসিল স্থগিত করা । তবেই মানুষের নূন্যতম মৌলিক অধিকার বাঁচার অধিকার রক্ষা হবে।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইন চীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম