হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা- নির্বাচন কমিশনার

Slider জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা

P1_EC+Shahnewaj
সাতক্ষীরায় ​ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগের রাতে কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনায় ২৪ ঘণ্টা পর মামলা করায় ​জেলা পুলিশ সুপার চৌধুরী মনজুরুল কবির ও পাঁচ ওসিকে ভর্ৎসনা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য এই ছয় পুলিশ কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

২২ মার্চ প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় আজ বুধবার এই ছয় কর্মকর্তাকে নির্বাচন কমিশনে হাজির হতে বলা হয়েছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী আজ তাঁরা কমিশনে হাজির হন। পাঁচ ওসি হলেন সদর, তালা, কলারোয়া, শ্যামনগর ও দেবহাটা থানার।

নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা অপরাধ করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা (ছয় পুলিশ কর্মকর্তা) অঙ্গীকার করেছেন তাঁরা কমিশনের নির্দেশ পালন করবেন। তাঁরা বলেছেন তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন অনেকে এলাকা ছাড়া। এসব ব্যক্তি দৃশ্যমান হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রে জোর করে ব্যালটে সিল মারার সময় হা করে দাঁড়িয়ে থাকলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দিতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত অনিয়মের ঘটনায় কেউ মামলা না করলে পুলিশকে বাদী হয়ে মামলা করতে হয়। কিন্তু পুলিশ একদিন বিলম্বে মামলা করেছে। তাই তাঁদের ভর্ৎসনা করা হয়েছে। এ জন্য তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

কমিশন সচিবালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভোটের আগের রাতে পুলিশের পোশাক পরে দুষ্কৃতকারীরা সাতক্ষীরার ছয়টি ইউনিয়নের ১৪টি কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মারে। যে কারণে কমিশন এসব কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। কেন্দ্রগুলো হলো তালা উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ভাগবা প্রাথমিক বিদ্যালয়, অভয়তলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র; সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাহমুদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাডুখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গাংনিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র; শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পূর্ব কৈখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৈখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শৈলখালী মাদ্রাসা; দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের খেজুরবাড়ীয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র; কলারোয়া উপজেলার কুশডাঙ্গা ইউনিয়নের কলাটুপি প্রাথমিক ও শাকদহ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কেরালকাতা ইউনিয়নের বলিয়ানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র।

এর মধ্যে কুমিরা ইউনিয়নের তিনটি কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সন্ত্রাসীদের ওপর গুলি করে তাদের তাড়িয়ে দেয়। বাকি আটটি কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ নির্বিকার থাকে।

কমিশন সচিবালয়ের সচিব সিরাজুল ইসলাম ২২ এপ্রিল নির্বাচনের দিন প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, কমিশন প্রমাণ পেয়েছে, ১১টি কেন্দ্রের দায়িত্ব পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। এ কারণে কমিশন তাঁদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। যে তিনটি কেন্দ্রের পুলিশ সন্ত্রাসীদের তাড়িয়ে ব্যালট পেপার রক্ষা করেছে, কমিশন তাঁদের প্রশংসা করেছে।

নির্বাচনের জন্য প্রণীত সরকারি কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন ১৯৯১ অনুযায়ী, নির্বাচনের সময় কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন তাঁকে সর্বোচ্চ দুই মাসের জন্য বরখাস্ত করতে পারবে।

০Like ২

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *