ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: মৃত্যুর পর মিডিয়া কিং হতে হলে নির্যাতিত হয়ে খুন হতে হবে। তনুর মত যারা নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন তাদের মৃত্যু পরবর্তি আর্তচিৎকার তাই প্রমান করে। তনু হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশ যে ভাবে উত্তপ্ত হয়েছে তাতে তাই মনে হয়।
আমরা হতভাগা। আমরা প্রতিবাদ করি মৃত্যুর পর। আমরা সম্মাননা দেই মৃত্যুর পর। আমরা সহায়তা করি মৃত্যুর পর শোক সন্তপ্ত পরিবারকে। পদকও দেই মরনোত্তর। আর গার্ড অব অনারও দিতে শিখেছি মৃত্যুর পর। এটি আমাদের রেওয়াজ। বলতে পারেন আইনও বটে।
তথ্য অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, কোন ব্যাক্তি মৃত্যুর আগে নিরাপত্তা শংকায় থাকলে তিনি থানায় জিডি করেন। পুলিশ ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি খুন হন। কোন মেয়েকে উত্ত্যক্ত করলে মেয়ের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ গেলে পুলিশ গড়িমসি করে বা অভিযোগের তেমন কোন গুরুত্বও দেয় না। কিন্তু মৃত্যুর পর প্রশাসনে তোলপাড়া শুরু হয়। আমরা যারা মিডিয়ায় কাজ করি আমরাও অনেকটা বিচারিক অবহেলার জন্য দায়ি।
কোন ঘটনা প্রথমে আমরা গুরুত্ব দেই না। যখন গুরুত্ব দেই তখন আর বিচার প্রার্থী জীবিত থাকেন না। আমাদের মিডিয়ার সম্পাদকেরাও এর জন্য অনেকাংশে দায়ি। কারণ কোন স্পর্শকাতর ঘটনার প্রারম্ভিক অবস্থায় সম্ভাবনাময় কোন রিপোর্ট পাঠালে সম্পাদকেরা তেমন গুরুত্ব দেয় না। যখন ঘটনা ঘটে যায় তখন গুরুত্ব বেড়ে যায়।
আইনের ভাষায় একটি কথা আছে। কোন অপরাধ সংঘটনের পূর্বে সম্ভাবনা দেখা দিলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিতে হয়। এতে অপরাধ অনেকাংশে কমে যায়। এটাকে বলা হয় প্রিভেন্টিভ প্রিপারেশন। এর দায়িত্ব প্র্রাপ্ত থাকেন বিশেষ করে গোয়েন্দা সংস্থা। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর লোকবল সংকটের কারণে মুখ থুবড়ে পড়ায় কাজও করতে পারছে না তেমন ভাবে। ফলে আমরা অপরাধ সংঘটনের পূর্ব সংকেত পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
তনুদের রক্ষা করতে হলে আমাদের নতুন আইন করার প্রয়োজন নেই। সকল বাহিনীকে সমন্বয় করে কাজ করার মানষিকতা তৈরী করে চলমান আইনকে মজবুত করলেই তনুরা রক্ষা পাবে। ফলে তনুদের জন্য আমাদের আর রাস্তায় নামতে হবে না। না হয় সারাজীবন তনুদের মরহুম মিডিয়া কিং হয়েই থাকতে হবে।