কুমিল্লা: কুমিল্লায় ধর্ষণ ও হত্যার শিকার কলেজ ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের এক খণ্ড খাস জমি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সকালে জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে তনুর বাড়িতে সমবেদনা জানাতে ছুটে যান মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মনসুর উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর আলী।
এসময় জেলা প্রশাসক ও মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা তনুর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের খাস জমি দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়।
পরে উপজেলা প্রশাসন তনুর বাবাকে নিয়ে মেয়েটির কবর জিয়ারত করেন।
উল্লেখ্য, সোমবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি কালভার্টের পাশ থেকে তনুর (১৮) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের ইয়ার হোসেনের মেয়ে। তনুর বাবা ময়নামতি সেনানিবাস এলাকায় অলিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। সেই সুবাদে পরিবার নিয়ে অনেকদিন ধরেই অলিপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তনু দ্বিতীয়।
জানা গেছে, সোমবার বিকেলে অলিপুরে প্রাইভেট পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হন তনু। সন্ধ্যায় ফিরে না আসায় বাড়ির লোকজন তাকে খুঁজতে শুরু করেন। অনেক খোঁজাখুঁজি পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে সেনানিবাসের কালা পানির ট্যাংক সংলগ্ন কালভার্টের পাশে ঝোপের মধ্যে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এসময় তার নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। মোবাইল ফোনটিও পড়েছিল পাশে। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে জানা গেছে।
তনু হত্যার পর থেকেই সারাদেশে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ২২ মার্চ দুপুরে এ হত্যায় জড়িদের বিচারের দাবিতে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড়ে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। ২৩ মার্চ দুপুরে এক ঘণ্টার জন্য কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। ২৪ মার্চ সকালে কান্দিরপাড়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ছাত্র-জনতা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।