তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের হিসাবে গত ছয় বছরে তিন হাজার ১৩৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার গরমিল পাওয়া গেছে। চুরি ও আর্থিক বিধি অনুসরণ না করায় এ গরমিল হয়েছে।
খোদ তিতাস গ্যাস আজ মঙ্গলবার সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছে। সংসদ ভবনে কমিটির এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, তিতাস গ্যাস তাদের বিভিন্ন কাজে ২০১০-১১ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থ বছর পর্যন্ত ২১২টি নিরীক্ষা (অডিট) আপত্তির কথা জানায়। এর সঙ্গে জড়িত টাকার পরিমাণ তিন হাজার ১৩৮ কোটি ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। কমিটি দ্রুত এসব আপত্তি নিষ্পত্তির সুপারিশ করেছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শওকত আলী সাংবাদিকদের বলেন, অডিট আপত্তির সংখ্যা অনেক। এর সঙ্গে জড়িত টাকার পরিমাণও অনেক, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। কমিটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করে আপত্তিগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলেছে।
কার্যপত্র থেকে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি অডিট আপত্তি ছিল ২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪ অর্থবছরের। ওই দুই বছর মোট ৭৪টি অডিট আপত্তির সঙ্গে জড়িত টাকার অর্থের পরিমাণ এক হাজার ৩৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এ ছাড়া ১৯৭২-৭৫ থেকে ২০০৯-১০ পর্যন্ত ৩৭২টি অডিট আপত্তি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। এর সঙ্গে জড়িত টাকার পরিমাণ ছয় হাজার ৪৩৮ কোটি ২১ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
তিতাস গ্যাসের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আর্থিক বিধি অনুসরণ না করা, সিস্টেম লস, চুরি ও ঘাটতি, মন্ত্রণালয় কর্তৃক তিতাস গ্যাসের গাড়ি ব্যবহার, বিদেশে প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কারণে এসব অনিয়ম হয়েছে।
সভাপতি বলেন, তারা বলেছে ‘অন্যান্য’ কারণেও টাকা নষ্ট হয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য বক্তব্য হতে পারে না। অন্যান্য কারণটা কী সেটা তিতাস গ্যাসকে স্পষ্ট করতে হবে।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অবৈধ গ্যাস বিতরণ লাইন উচ্ছেদের অংশ হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত মোট ১৯৯টি অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ৩১৬ কিলোমিটার পাইপ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য আবদুস শহীদ, আফসারুল আমীন, শামসুল হক, মাঈন উদ্দীন খান বাদল ও রুস্তম আলী ফরাজী অংশ নেন।