ঢাকা: মায়ানমারের সংসদে চলছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, অর্ধ শতাব্দিরও বেশি সময় পর এবার দেশটির জনগণ একজন বেসামরিক ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেতে চলেছেন।
মায়ানমার সংসদের নিম্নকক্ষ, উচ্চকক্ষ ও সেনা ব্লক থেকে মনোনীত তিন প্রার্থীর মধ্যে থেকেই একজনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হবে এ প্রক্রিয়ায়। প্রার্থীরা হলেন- নিম্নকক্ষে মনোনয়ন পাওয়া এইচতিন কিয়াও, উচ্চকক্ষে মনোনয়ন পাওয়া হ্যানরি ভ্যান এইচতি ইউ এবং সেনা ব্লক থেকে মনোনয়ন পাওয়া মাইন্ত সুই।
গত বছর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মায়ানমারের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পাওয়া অং সান সুচি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) প্রথম দুই প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করে। এদের মধ্যে হ্যানরি ভ্যান এইচতি ইউ সংখ্যালঘু চীন সম্প্রদায়ের নেতা।
তবে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অং সান সুচি’র ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এইচতিন কিয়াওয়েরই উৎরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে দলীয় সভানেত্রী সুচি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে পারেননি। মায়ানমারের ২০০৮ সালের সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী, বিদেশি কাউকে বিয়ে করলে বা সন্তানরা বিদেশি পাসপোর্টধারী হলে সেই ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হতে পারবেন না। সুচির দুই সন্তান ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার ব্যাপারে তিনি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় পড়ে গেছেন।
তবে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালেই সুচি ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, প্রেসিডেন্ট হতে না পারলে, তার চেয়েও বড় কিছু হয়ে তিনি দেশ পরিচালনা করবেন। সুচির বিশ্বস্ত এইচতিন কিয়াওকেই তাই বিশেষজ্ঞরা মায়ানমারের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখছেন।
জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভের পর মায়ানমারের সংসদে ২৫ শতাংশ সেনাবাহিনীর কোটার বাইরে এখন বাকি প্রায় সবগুলো আসনই এনএলডি’র দখলে। ফলে দলটির সমর্থিত প্রার্থীই প্রেসিডেন্ট মনোনীত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আর এর মাধ্যমে গত পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় পর মায়ানমারের জনগণ প্রথমবারের মতো একজন বেসামরিক ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেতে চলেছে।
এখানে উল্লেখ্য, মনোনয়ন পাওয়া তিন প্রার্থীর মধ্যে পরাজিত দুই প্রার্থী দেশটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সে হিসেবে, এইচতিন কিয়াও প্রেসিডেন্ট মনোনীত হলে ভ্যান এইচতি ইউ ও মাইন্ত সুই ভাইস-প্রেসিডেন্ট মনোনীত হবেন। এতে করে প্রথমবারের মতো একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাবে মায়ানমার। সেই সঙ্গে মাইন্ত সুইয়ের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হওয়ার মাধ্যমে সরকারের অংশীদারিত্বে সেনাবাহিনীকেও দেখা যাবে।