দলে ভাঙন দীর্ঘ দিন জমে থাকা ক্রোধের বিস্ফোরণ বলে মন্তব্য করেছেন জাসদ (একাংশ) কার্যকরি সভাপতি মাঈনুদ্দিন খান বাদল। তিনি দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। রোববার জাতীয় সংসদে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মন্ত্রী হওয়ার পর দলীয় প্রধান ব্যক্তিগত সম্পর্ককে বেশি গুরুত্ব দেয়ায় ক্ষোভ থেকে এটা হয়েছে। মন্ত্রী হওয়ার পর আর্থিক বিষয়ে উনার (ইনু) আচরণ সম্পর্কে দলে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে অস্পষ্টতা আছে, অস্বচ্ছতা আছে। দলীয় সভাপতি ব্যক্তিগত রাগ-অনুরাগ,ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি তাই নিয়েছেন। আমাদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তিনি ছয় বছর আমাদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়াকে কোন কাজ করতে দেননি। বাদল দাবি করেন দশম সংসদে দল থেকে যে ছয়জন এমপি হয়েছেন তাদের চারজনই আম্বিয়ার নেতৃত্বে দলের সঙ্গে আছেন। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির ১৪ সদস্যের ১০ জনই বেরিয়ে এসেছেন। দল ভাঙার কোন পরিকল্পনা তাদের ছিল না জানিয়ে বাদল বলেন, আমরা দল ভাঙিনি,ভাঙতে চাইনি,ভাঙার কোন পরিকল্পনা আমাদের ছিল না। এই ভাঙন কমিটির সাথে আচরণ এবং দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ক্রোধের বিস্ফোরণ। তিনি বলেন,আমাদের কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত ছিল সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কার্যকরী সভাপতি একবারের বেশি স্বপদে থাকতে পারবেন না। সে একবারের বদলে আমরা তিনবার (ইনুর সভাপতিত্ব) পার করে দিয়েছি। আমাদের দলে কথা উঠেছিল, দলের কেউ যদি নির্বাহী দায়িত্ব গ্রহণ করেন তবে তিনি দলের পদে থাকতে পারবেন না। যে কোন একটি দায়িত্ব রাখতে পারবেন। আমাদের ক্ষেত্রে এই দুটি বিষয়ে আলোচনা করে হাসানুল হক ইনুকে কাউন্সিলররা সুযোগ দিয়েছে। উনি সভাপতি ও মন্ত্রী দুটোই থাকতে পারবেন।
ভাঙন জমে থাকা ক্রোধের বিস্ফোরণ: বাদল
ডশরিন আখতারকে সাধারণ সম্পাদক করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে আমরা লক্ষ্য করলাম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শিরিন আক্তারের নাম প্রস্তাব করা হল। এটা আসতেও পারে। তার নাম প্রস্তাব করার পর সমর্থন করা হয়েছে। সেটাও হতে পারে। কাউন্সিলরদের মধ্য থেকে কেউ বললো পাস পাস, শিরিন আক্তার পাস। সেটাও হতে পারে। কিন্তু আপনার অনুগ্রহপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার বলতে পারে না, পাস হয়ে গেছে। আমরা তাকে (ইনু) বার বার বলেছি,সম্মেলনে কাউন্সিলরদের স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করতে দিন। কাউন্সিলরদের রায় আমরা নত চিত্তে মেনে নেওয়ার কথাও বলেছি। কিন্তু আপনার (ইনু) হঠকারী কর্মকা-, তথাকথিত মন্ত্রিত্বের ঔদ্ধত্যের কারণে কাউন্সিল ধ্বংস হয়েছে। এর উত্তর উনাকেই (ইনু) দিতে হবে। ভাঙতে চাইনি, ভাঙন কাঁধের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই দলটি যতবার ভেঙেছে ফিনিক্স পাখির মতো ছাই থেকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। দলীয় কার্যালয় নিয়ে বাদল বলেন, আপাতত তাদের কোন নির্দিষ্ট অফিস নেই। জাসদের যে অফিসটি রয়েছে তা চারজনের নামে। এর মধ্যে একজন কাজী আরেফ আহমেদ মারা গেছেন। বাকি তিনজনের মধ্যে একজন হাসানুল হক ইনু। বাকী দুইজন আমাদের সঙ্গে আছে। এটা আইনি বিষয় এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত। সংবাদ সম্মেলনে শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধানসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।