বাংলাদেশী অর্থ পাচার: ব্যাংক ম্যানেজারকে নিয়ে বিতর্ক

Slider অর্থ ও বাণিজ্য সারাবিশ্ব

5462_lead

বাংলাদেশী অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহভাজন ব্যাংক ম্যানেজার মাইয়া সান্তোষ দিগুইতোকে বিমান থেকে নামিয়ে দেয়ার ঘটনা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার তাকে জাপানগামী বিমান থেকে নামিয়ে দেয়ার পর আইন বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর তৃতীয় আকুইলিনো কোকো পিমেনটেল বলেছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছাড়া তাকে বিমানবন্দরে আটকে দেয়ার অধিকার সরকারের নেই। দিগুইতোর ক্ষেত্রে এর কোনটিই ছিল না। তবে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও মুদ্রা বিষয়ক কমিটির চেয়ার সিনেটর তৃতীয় সার্জিও ওসমেনা বলেছেন অন্য কথা। তিনি দিগুইতোর দেশছাড়ার সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, যেহেতু পাচার হওয়া অর্থ এখনও উদ্ধার হয় নি, তাই এ ঘটনা একটি অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য। দিগুইতোকে দেশ ছাড়া থামাতে কর্তৃপক্ষীয় সিদ্ধান্তে বড় পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে এই ওসমেনার। তিনি বলেছেন, যে সময়ে দিগুইতো দেশ ছাড়ছিলেন তাতে সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে। তার ব্যাংক এত বড় একটি অর্থ পাচারে জড়িত। এ নিয়ে যখন তদন্ত চলছে ঠিক তার মাঝখানে তিনি দেশ ছাড়ছেন এটা স্বাভাবিক নয়। তার দেশ ছাড়ার এই সময় নিয়ে আমি খুবই আশ্চান্বিত। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা। তাতে ওই ব্যাংকের মাকাতি শহরের জুপিটার স্ট্রিট শাখার ম্যানেজার মাইয়া সান্তোষ দিগুইতো জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে যখন তদন্ত চলছে ঠিক তখনই তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে শুক্রবার ফিলিপাইন এয়ারলাইন্সের টোকিওগামী একটি বিমানে আরোহন করেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয়। তাকে অভিযুক্ত করেছেন পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অন্যতম সন্দেহভাজন উইলিয়াম সো গো। তিনি বলেছেন, তার স্বাক্ষর জাল করে দিগুইতি তার ব্যাংকে একাউন্ট খুলেছেন। এরপর ওই অর্থ পাচার হয়েছে। তবে দিগুইতি কোন অন্যায় করেন নি বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, বিদেশী অর্থ আদান প্রদান করে ব্যাংকের প্রধান শাখা। ওই শাখার মাধ্যমেই এ অর্থ তার ব্যাংকে জমা হয়েছে। এ ঘটনাটি তদন্ত করছে ফিলিপাইনের এন্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) ও ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। অন্যদিকে তদন্ত করছে সিনেট কমিটি। তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করার কথা রয়েছে মঙ্গলবার। তবে আরসিবিসি যে তদন্ত করছে তার জবাবে দিগুইতো বলেছেন, এ অর্থ স্থানান্তরের কৃতীত্ব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের। আরসিবিসির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লরেঞ্জো টান এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। গত বছর দিগুইতোর শাখায় যে ৫ অভিযুক্ত একাউন্ট খুলেছেন তাদের একাউন্টে এ অর্থ স্থানান্তরের অনুমোদন দিয়েছিলেন তিনিই। কিন্তু এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লরেঞ্জো টান। বলেছেন, তিনি এর কিছুই জানেন না। তদন্ত যাতে নিবিঘেœ হতে পারে সে জন্য তাকে ছুটিতে পাঠিয়েছে ব্যাংক। মঙ্গলবার সিনেট কমিটিতে শুনানির জন্য লরেঞ্জো টান, দিগুইতো ও উইলিয়াম সো গো’কে তলব করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *