ঢাকা : ঠিকাদার কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি (এসপিসি পোল) সরবরাহ করছে না। বৈঠক করে, চিঠি দিয়েও কাজ হচ্ছে না। এতে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার সরকারি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কর্তৃপক্ষ।
আর সে জন্যই চলতি মাসের ৩ তারিখ সর্বশেষ সতর্কীকরণ পত্র পাঠিয়ে ঠিকাদার কোম্পানিগুলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে আরইবি। এ বিষয়ে আরইবি বলছে, পোল (খুঁটি) প্রাপ্তির ভিত্তিতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের লাইন নির্মাণের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। পোল সরবরাহে বিলম্বের কারণে লাইন (সঞ্চালন) নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ব্যহত হচ্ছে। এতে সরকারের ‘ভিশন-২০২১’ অনুসারে ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছানোর কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, ১৮ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় গত সেপ্টেম্বরে ছয়টি বেসরাকরি কোম্পানিকে ৪৯২ কোটি ২৯ লাখ টাকার ২ লাখ ১৪ হাজার ১২২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি সরবরাহের কাজ দেয়া হয়। ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব খুঁটি সরবরাহের কথা থাকলেও এখনো প্রায় ৫০ হাজার খুঁটি পাওয়া যায়নি।
সূত্র আরো জানায়, খুঁটি সরবরাহে বিলম্ব হওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি মাসে বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করে দেয়া হয়। এরপর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চিঠির মাধ্যমেও তাগাদা দেয়া হয়। তারপরও প্রাপ্য খুঁটি বুঝে পায়নি আরইবি।
এ বিষয়ে আরইবি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন বলেন, ‘পোলগুলো যাতে তাড়াতাড়ি পাই সে জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। এটা এক ধরনের তাড়া দেয়া বলা যেতে পারে। তবে যারা পোল দেবে না তাদের জরিমানা (এলডি) করা হবে।’
এদিকে গত বছরের ২৭ আগাস্ট সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ৩৫ হাজার ৬৮৭টি করে ছয়টি সাব-প্যাকেজে ছয় প্রতিষ্ঠান ২ লাখ ১৪ হাজার ১২২টি খুঁটি সরবরাহের কাজ পায়। এর মধ্যে সাব-প্যাকেজ ৯২-২১৩-এর আওতায় ৮২ কোটি ৭ লাখ টাকায় কাজ পাওয়া টিএসকো পাওয়ার ১১ হাজার ৮৯০টি খুঁটি সরবরাহ করেনি। সাব-প্যাকেজ ৯২-২১৫-এর মাধ্যমে ৮২ কোটি ১ লাখ টাকায় কাজ পাওয়া কনটেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানির সরবরাহ বাকি রয়েছে ৫ হাজার ৩৯৪টি খুঁটি।
এছাড়া সাব-প্যাকেজ ৯২-২১৬-এ মোট ৮২ কোটি ৩ লাখ টাকায় কাজ পাওয়া কনফিডেন্স পাওয়ার ১২ হাজার ৪৮৭টি খুঁটি দেয়নি। সাব-প্যাকেজ ৯২-২১৭-এর ৮২ কোটি ৮ লাখ টাকার কাজটি পেয়েছে ‘পোলস অ্যান্ড কংক্রিট লিমিটেড’। তারা ১২ হাজার ৩১৭টি খুঁটি সরবরাহ করেনি। ৮২ কোটি ৫ লাখ টাকায় সাব-প্যাকেজ ৯২-২১৮-এর কাজ পাওয়া দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের বাকি আছে ৭ হাজার ৭৫৬টি খুঁটি।
সর্বশেষ গত ৩ মার্চ প্রকল্প পরিচালক আব্দুল খালেক এক চিঠিতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে দ্রুত খুঁটি সরবরাহ করতে বলেন। না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।