ঢাকা : বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আসামি বলায় এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই উল্টো ১৫ মামলার আসামি বলে অভিযুক্ত করলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তারেক রহমানের ১০ম কারাবরণ দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ।
৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দীতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের রেশ ধরে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এক-এগারোর পরে নাইকো ও মিগ-২৯ দুর্নীতির মামলাসহ মোট ১৫টি মামলার আসামি ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্যারোলে বিদেশে গিয়েছিলেন, জামিন পর্যন্ত নেননি। আমরা এখনো জানি না, ওইসব মামলায় তিনি জামিন নিয়েছেন কিনা, কিংবা মামলাগুলো প্রত্যাহার হয়েছে কিনা। অথচ তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ১৫টি মামলার আসামি হয়ে আপনি কীভাবে এবং কোন মুখে বললেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে আসামিরা নির্বাচিত হয়েছেন। আপনি এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। কারণ, আপনি প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি একটি দলেরও (আওয়ামী লীগ) প্রধান। তাই আপনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে অপর একটি রাজনৈতিক দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সম্পর্কে কটুক্তি করে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কারা নির্বাচিত হবেন, তা নির্ধারণ করা কেবল সেই দলের কাউন্সিলরদেরই দায়িত্ব। এটি নিয়ে অন্য কোনো দলের প্রধান (শেখ হাসিনা) মাথা ঘামাতে পারেন না।
বিএনপির এ নীতি-নির্ধারক বলেন, এক-এগারোর সরকার জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করতেই দলটির ভবিষ্যত নেতা তারেক রহমানকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এজন্য তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডের নামে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। তিনি এখনো সুস্থ নন। সেজন্য দীর্ঘ দিন যাবত বিদেশে (লন্ডন) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে মোশাররফ বলেন, ‘বর্তমান সরকারও তারেক রহমান, জিয়া পরিবার ও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ভয় পায়। এজন্য তারা অঘোষিত বাকশালী কায়দায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে সকল প্রকার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে মিথ্যা মামলা দিয়ে তারেক রহমানকে দূরে রাখতে চায় তারা। তিনি দেশে আসুক, সরকার তা চায় না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
যৌথভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আব্দুল লতিফ জনি ও আসাদুল করিম শাহীন।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেয়া ভাষণে বলেছিলেন, ‘বিএনপি শীর্ষ দুই পদের নেতা নির্বাচন করেছেন। তারা কারা? বিএনপির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান। দুইজনই আসামি। একজন এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার মামলার আসামি, আরেকজন ইন্টারপোলের আসামি এবং মানি লন্ডারিং ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামি। এরা জনগণকে কী দেবে? এরা নিজেরাই তো আসামি।