ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ৬০টি ইউপিতে বিএনপির কোনো চেয়ারম্যান প্রার্থী নেই। এর মধ্যে ১৩টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা এ পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে। দ্বিতীয় ধাপের জন্য তালিকাভুক্ত গোপালগঞ্জ জেলার ৩২টি ইউপির মধ্যে কান্দি, হরিদাসপুর ও উলপুর ছাড়া ২৯টি ইউপিই বিএনপি প্রার্থীশূন্য। এ জেলায় চারটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে। এ ধাপে মাদারীপুরের ১৫টি ইউপির মধ্যে ৯টিতেই বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা হয়নি। এ জেলায় একটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
যেসব ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই সেগুলো হচ্ছে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের দীঘিরপাড়া, গোপালগঞ্জ সদরের বোড়াশী, বৌলতলী, দুর্গাপুর ও কাঠি, জয়পুরহাট সদরের ধলাহার, দোগাছী ও জামালপুর, ভোলা সদরের কাচিয়া, মাদারীপুর সদরের ঝাউদী এবং ফেনীর পরশুরামের চিখিলা, বক্সমাহমুদ ও মির্জানগর।
এই ১৩টি ইউপি ছাড়াও যেসব ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই সেগুলো হচ্ছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ও রামজীবন, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার আমতলী, বান্ধাবাড়ী, হিরণ, কালাবাড়ী, কুশলা, পিঞ্জুরী, রাধাগঞ্জ, রামশীল, সাদুল্লাপুর ও শুয়াগ্রাম, গোপালগঞ্জ সদরের চন্দ্রদিঘলিয়া, গোবরা, গোপীনাথপুর, জালালাবাদ, কাজুলিয়া, করপাড়া, লতিফপুর, মাঝিগাতি, নিজরা, পাইককান্দি, রঘুনাথপুর, সাহাপুর, সাতপাড়, সুকতাইল ও উরফি, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডর ৫ নম্বর দুর্গাপুর, জামালপুর সদরের বাঁশচড়া, জয়পুরহাট সদরের পরাণপৈল, ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের ধর্মগড় নেকমরদ, দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলাদিপুর, বিরামপুরের খানপুর, দিওড় ও পলিপ্রয়াগপুর, পাবনার ফরিদপুরের ফরিদপুর, মাদারীপুর সদরের বাহাদুরপুর, ছিলারচর, ধুরাইল, কলিকাপুর, শিরখারা, দুধখালী, কেন্দুয়া ও মুস্তফাপুর, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের চিত্রকোর্ট ও রাজনগর, রংপুরের পীরগঞ্জের শ্যানেরহাট এবং সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল ও ইছাকলস।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে দ্বিতীয় ধাপে ৬৪৭টি ইউপির মধ্যে ফেনী জেলার পরশুরামের তিনটি ইউনিয়ন বাদে গত বুধবার শেষ দিনে ৬৪৪টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে মোট তিন হাজার ১০৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৫টি রাজনৈতিক দলের এক হাজার ৫৫৫ জন রয়েছেন। আওয়ামী লীগের ৬৪৫ জন, বিএনপির ৫৮৭ জন, জাতীয় পার্টির ১৭৫ জন, জাসদ (মশাল) ২৪ জন, বিকল্প ধারার একজন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ছয়জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৯৩ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) পাঁচজন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির দুজন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের দুজন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পাঁচজন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের দুজন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের একজন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির একজন ও জাকের পার্টির ছয়জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার হিরণে আওয়ামী লীগের দুজন এবং দিনাজপুরের কাহারোলের সুন্দরপুর ইউপিতে বিএনপির দুজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
ফেনী জেলার পরশুরামের তিনটি ইউপিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় একদিন বাড়ানোর ফলে গতকাল বৃহস্পতিবারও সেখানে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশন গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই তিন ইউপির তথ্য জানাতে পারেনি। তবে আমাদের ফেনী প্রতিনিধি জানান, ওই তিন ইউপিতে গতকালও বিএনপি বা অন্য কোনো দল ও স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি। ওই তিন ইউপিতে আওয়ামী লীগের একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন। সে হিসাবে দ্বিতীয় ধাপের ৬৪৭টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে মোট তিন হাজার ১১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এবং এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংখ্যা ৬৪৮।
এদিকে প্রথম ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ৬০টিরও বেশি ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। বিএনপির অভিযোগ, প্রথম ধাপে তাদের ১১৪ জন প্রার্থী নানা ধরনের বাধার কারণে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি।