ঢাকা: বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া মশাবাহিত জিকা ভাইরাসের বিষয়ে নতুন ‘সর্তকবাণী’ দিলেন গবেষকরা। ভাইরাসটি এতোদিন শিশুদের ছোট মাথা নিয়ে জন্ম ও স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতার কারণ হলেও নতুন করে ‘সাময়িক প্যারালাইসিস’র কথা বলা হচ্ছে।
২০১৩ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ায় জিকা ভাইরাসের ৪২টি ঘটনার ওপর পরীক্ষা করে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।
গবেষণার ফলাফলের বিষয়ে গবেষকরা জানান, প্রথমবারের মতো দেখা গেছে, গুইলিয়ান-বার সিনড্রোমের পেছনে জিকা ভাইরাসের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। এই সিনড্রোমের ফলে স্নায়ুকোষ আক্রান্ত হয় ও সাময়িক প্যারালাইসিস হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
ল্যাটিন আমেরিকার পাঁচ দেশ- ব্রাজিল, এল সালভাদর, ভেনিজুয়েলা, কলম্বিয়া ও সুরিনামে গুইলিয়ান-বার সিনড্রোমে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তবে এর সঙ্গে জিকা ভাইরাসের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি-না সে বিষয়ে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করে কিছু বলেন নি।
গবেষণায় দেখা যায়, ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ায় গুইলিয়ান-বার রোগীদের শতকরা ৩৮ শতাংশকে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসা দিতে হয়েছে। কারণ তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছিল।
গুইলিয়ান-বার প্রথমে মানুষের পা দুর্বল করে ধীরে ধীরে শরীরে উপরের দিকে উঠতে থাকে। এতে আক্রান্ত প্রতি চারজনের একজনকে অক্সিজেন দিতে হয়। আক্রান্তদের অনেকেই স্বাভাবিক হলেও শতকরা ২০ শতাংশের শরীরে বড় কোনো অক্ষমতা দেখা দেয়। আর শতকরা ৫ জনের মৃত্যু হয়।
এ পর্যন্ত ২৪টির বেশি দেশ ও টেরিটরিজে জিকা ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে প্রকোপ দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, কলম্বিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশে। কলম্বিয়ার ২১শ’ অন্তঃস্বত্তা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
মশাবাহিত এ ভাইরাসের মহামারী রুখতে সম্প্রতি টিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, টিকা তৈরিতে এরইমধ্যে গবেষণা শুরু করেছেন প্রখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানী গ্যারি কবিনগের। উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডার একজন নেতৃত্বস্থানীয় বিজ্ঞানী তিনি।
যিনি কানাডার কুইবেক শহরের লাভাল ইউনিভার্সিটি ও কানাডার উইনিপেগের জাতীয় মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরির প্রধান প্যাথোজেন বিশেষজ্ঞ হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।
একই সঙ্গে কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনেসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ডেভিড উয়েনেরের সঙ্গেও। এছাড়া ইভোনিও ফার্মাসিউটিক্যালস ও দক্ষিণ কোরিয়ার জিনেওয়ান লাইফসায়েন্সের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন কবিনগের।