স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর অফিস: ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে সংগঠিত হয়েছিল প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ। ২৬ মার্চ জাতীয় ভােেব স্বাধীনতা ঘোষনার পূর্বেই গাজীপুরে প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধের মাধ্যমে উড়ানো হয়েছিল জাতীয় পতাকা। গাজীপুরের বীর সেনানীরা দুঃসাধ্য কাজটি সাধন করেছিলেন। যাদের নেতৃত্বে প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল তাদের মধ্যে এ্যাকশন কমিটির আহবায়ক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এড. আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে থাকার পরও জাতীয় মর্যাদা পাচ্ছে না প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস।
২৪ ফেব্রুয়ারী গাজীপুর জেলা প্রশাসকের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ধারাবাহিক সভায়ও প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস জাতীয় মর্যাদা পায়নি। বৈঠক সূত্র বলছে, জেলা প্রশাসক পরিস্কার বলে দিয়েছেন প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস স্থানীয় বিষয়। এই দিবসটি স্থানীয় ভাবে পালিত হবে। এটি জাতীয় কোন বিষয় নয়।
ওই সভায় উপস্থিত গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডিপুটি কামান্ডার এস এম মুজিবুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসক বলেছেন প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস স্থানীয় ভাবে পালন করা যেতে পারে। জাতীয় বিষয় নয় এটি।
একই কথা বলেছেন, বৈঠকে উপস্থিত সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট গাজীপুর জেলার সভাপতি এড, ইস্তেকবাল হোসেন নওরোজ। আরো যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের অনেকেই একই কথা বলেছেন।
বৈঠক সূত্র বলছে, বৈঠকের শুরুতেই জেলা প্রশাসক বলেছেন, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করা হবে জাতীয় ভাবে। সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক নেই তার শাসন আমল নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে মর্মে জেলা প্রশাসক প্রথমেই বক্তব্য দিলে বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। এর পর সেক্টর কমান্ডার’স ফোরাম গাজীপুর জেলার নেতা আব্দুল বাতেন তার সাংগঠনিক পরিচয় দিয়ে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে চাইলে জেলা প্রশাসক সেক্টর কমান্ডার’স ফোরাম কি নতুন কোন সংগঠন কিনা জানতে চান। এ নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়। জেলা প্রশাসক কর্তৃক ওই বিতর্কিত দুটি বিষয় উপস্থাপিত হওয়ার পর বৈঠকের প্রাণচাঞ্চল্যে ভাটা পড়ে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি। তবে ওই সভায় উপস্থিত একাধিক সরকারী কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকের দুটি বিতর্কিত বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ফলে অগ্নিঝরা ১৯ মার্চ প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ দিবসটি জাতীয় রুপ লাভ করছে না বলেই ধরে নিতে হবে। বর্তমান মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর নেতৃত্বে সংঘটিত প্রথম স্বশস্ত্র প্রতিরোধ দিবসটি আর কবে জাতীয় মর্যাদা পাবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেল।