ঢাকা: সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় কারাবন্দি হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
জি কে গউছের আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কে এম মাসুদ রানা।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
মাসুদ রানা সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার সময় গউছ হজে ছিলেন। এরপরও আভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এ বক্তব্য শুনে আদালত দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছেন।
তিনি জানান, মামলাটি এখন সিলেট দ্রুত বিচার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যেরবাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার দিন মধ্যরাতের পর হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন।
প্রথমে সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান মামলাটি তদন্ত করে ১০ জনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদালতের নির্দেশে সিআইডি’র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম এ মামলার অধিকতর তদন্ত করে ২০১১ সালের ২০ জুন আরও ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আগের আসামিদেরও এতে রাখা হয়।
কিন্তু ২০১১ সালের ২৮ জুন কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া অভিযোগপত্রের ওপর হবিগঞ্জের বিচারিক আদালতে নারাজি আবেদন করেন।
২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি নারাজি আবেদন গ্রহণ করে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
এ আদেশের প্রেক্ষিতে সিআইডি’র এএসপি মেহেরুন নেছা ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে কিবরিয়া হত্যা মামলার সংশোধিত সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন। নতুন আসামিদের নিয়ে এ মামলায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ জনে।
এরপর ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর ওই ১১ জনকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেনে আদালত। এ পরোয়ানা জারির পর একই বছরের ২৬ ডিসেম্বর জি কে গউছ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সেই থেকে তিনি কারাবন্দি রয়েছেন। সর্বশেষ গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর দ্রুত বিচার আদালত গউছের জামিন নামঞ্জুর করেন। বিচারিক আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন গউছ। রোববার এ আবেদনের শুনানি করে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।