ঢাকা: বৃক্ষমানব আবুল হোসেন বাজনদারের ডান হাতে দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডান হাতের কবজির উপরের দিকে এবং হাতের তালু অংশে এ অস্ত্রোপচার করা হয়। গত শনিবার ডান হাতের পাঁচটি আঙুলে প্রথম দফা অস্ত্রোপচার করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান আবুল কালামের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল আবুল বাজনদারের অস্ত্রোপচার করেন। দুপুর সোয়া ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এই অস্ত্রোপচার হয়। বৃক্ষমানবের চিকিৎসায় অধ্যাপক ডা. আবুল কালামকে প্রধান করে ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
অস্ত্রোপচার শেষে চিকিৎসক দলের প্রধান আবুল কালাম উপস্থিত সংবাদ কর্মিদের জানান, ‘আবুল বাজনদারের ডান হাতের কবজির ওপরের দিকে এবং তালুর অংশে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তাঁদের ধীরে ধীরে এগোতে হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে আবুলের ডান হাতের পুরো অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হলো। ’
তিনি বলেন, মনে হচ্ছে, আবুল বাজনদারের ১৩ থেকে ১৫ দফা অস্ত্রোপচার করতে হবে। আবুল বাজনদার সেরে উঠবেন বলে আশা প্রকাশ করেন বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান আবুল কালাম।
খুলনার পাইকগাছা থানার সরল গ্রামের আবুল বাজনদারকে গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। ট্রি-ম্যান সিনড্রোমে ভোগা আবুল বাজনদার দারিদ্র্যের কারণে এত দিন সুচিকিৎসা পাননি। গত শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁর ডান হাতটি থেকে শিকড়ের মতো বৃদ্ধি পাওয়া অংশগুলো অস্ত্রোপচার করে তুলে নিয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানান, আবুল বাজনদারসহ বিশ্বে বিরল এ রোগে আক্রান্ত চারজন রোগীকে শনাক্ত করা গেছে। গণমাধ্যমে আসা ইন্দোনেশিয়ার বৃক্ষমানব গত বছরের ৩০ জানুয়ারি মারা গেছেন।
চিকিৎসকদের ধারণা, আবুল বাজনদার ‘এপিডার্মোডিসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস’ রোগে আক্রান্ত। রোগটি ‘ট্রি-ম্যান’ (বৃক্ষমানব) সিনড্রম নামে পরিচিত। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ রোগ হয়। ১০ বছর ধরে আবুল এই রোগে ভুগছেন। তাঁর হাত ও পায়ের আঙুলগুলো গাছের শিকড়ের মতো হয়ে গেছে এবং দিনে দিনে তা বাড়ছিল।
চিকিৎসক আবুল কালাম জানান, আবুলের বায়োপসি পরীক্ষায় ক্যানসারের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাঁরা অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।