সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে মৃত্যু ৫১৬২

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ

59768_Road Accident Logo
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: দেশে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ৫,১৬২ জনের মৃত্যু ঘটছে। এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই মারা যাচ্ছেন ৩,১৬৭ জন। দেশের নয়টি জাতীয় মহাসড়কের ৫৭ কিলোমিটারের মধ্যেই ৯৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। এসব মহাসড়কে ব্ল্যাক-স্পট রয়েছে ২০৮টি। এসব স্পটে যেসব দুর্ঘটনা ঘটে এর ৩৮ শতাংশই বাসের কারণে। ৬৪ জেলার মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। দুর্ঘটনার মূল কারণ বেপরোয়া গাড়ি চালানো। রাজধানীর কাওরান বাজারের একটি ভবনের মিলনায়তনে ব্র্যাক ও পিপিআরসি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতি: বাস্তবতা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের অর্থায়নে পিপিআরসি এই গবেষণাকর্ম সম্পাদন করে। অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক আসিফ সালেহ’র সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের রোড সেফটি কর্মসূচির পরিচালক আহমেদ নাজমুল হোসাইন।
গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মোট দুর্ঘটনার ৪০ দশমিক ৯০ শতাংশ ঘটে বাসস্ট্যান্ডে। ২৮ দশমিক ৪০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে বাজারে। বাসস্ট্যান্ডের পরেই ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে সড়কের পার্শ¦বর্তী বাজার এলাকা। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানের মোট দৈর্ঘ্য ৫৭ কিলোমিটার। দুর্ঘটনার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী বাস। সড়ক দুর্ঘটনায় সারা বিশ্বে প্রতিবছর ১২ লক্ষাধিক মানুষের নিহত হচ্ছেন উল্লেখ করে ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা সড়ক দুর্ঘটনাকে বিশ্বে অপঘাতে মৃত্যুর অষ্টম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোকে। এছাড়া অন্যান্য কারণের মধ্যে আছে, দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়া বা পার পেয়ে যাওয়া, চালকের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না থাকা, ত্রুটিপূর্ণ যান, রাস্তা নির্মাণে ত্রুটি, ট্রাফিক আইন প্রয়োগে দুর্বলতা ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি ব্ল্যাক-স্পট সংস্কার করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ আরিচা সড়ককে আইডিয়াল রোড হিসেবে তৈরি করেছি। তাই এবার ঈদে কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে নসিমন-করিমনসহ অবৈধ যানবাহনকে দায়ী করে তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বাধা ও অসযোগিতার কারণে এগুলো উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। তারপর সড়ক যোগাযোগে আমরা অনেক উন্নয়ন করেছি। আগামী ঈদুল ফিতরের আগে সব ফোর লেনের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে এ সময় তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ লিগাল এইড সার্ভিস ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন’র সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, এফবিসিসিআই’র পরিচালক এবং রোড সেফটি অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হক, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইমার্জেন্সি মেডিসিনের সভাপতি প্রফেসর হুমায়ুন কবির চৌধুরী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *