ঢাকা : বিগত পৌর নির্বাচনের পর এবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনেও প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিতব্য প্রথম দফার ৭৩৯টি ইউপি নির্বাচনে ৪৫০টিতেই প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে দলটি। তারা শুধুমাত্র ২৮৯টিতে প্রার্থী দিতে পেরেছে।
পৌরসভা নির্বাচনে চার শতাধিক মেয়র পদে মাত্র ৭৩ জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে একটিতে জয় পেয়েছিল দলটি। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এরশাদ বলেছিলেন, ‘পৌরসভায় প্রার্থী দেয়ার মতো লোক নেই, একটি মাত্র জয়, এটা আমার জন্য লজ্জার।’
আগামী ২২ মার্চ দেশের ৩৫টি জেলার মোট ৭৩৯টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ নির্বাচনকে ‘টেস্ট কেস’ হিসেবে দেখছেন তারা। কিন্তু কেন্দ্র থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও মাঠপর্যায়ে সাড়া মেলেনি।
আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রথম দফায় যে ৩৫টি জেলায় নির্বাচন হচ্ছে, তার মধ্যে ২৪টি জেলাতে এখনও কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পারেনি দলটি। ওই জেলার নেতারা নিজেদের মধ্যে কোন্দলে লিপ্ত। দলীয় এমপিরাও তাদের কোনো সহযোগিতা করছে না। তা ছাড়া যেসব রওশনপন্থী সাংসদ জেলা কমিটিতে আছেন, তাদের কোনো ভূমিকা নেই এই নির্বাচনে। বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে এখনও সন্দিহান তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
নেতাকর্মীরা বলছেন, তারা সরকারে না বিরোধী দলে এটা এখনও স্পষ্ট না হওয়ায় মাঠপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির আলাদা সত্তা তৈরি হয়নি। ফলে এই নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মাঠে লড়াইয়ে তেমন একটা সুবিধা করতে পারবে না তারা।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হয়ে তারা বরাবরই অসুবিধায় পড়েন। এসব কারণে ৩৫টি জেলার মোট ৭৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অর্ধেকও প্রার্থী দিতে পারেনি। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছিলেন, এই নির্বাচনে তারা ৫ শতাধিক চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারবেন।
দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে দায়িত্বরত এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, ‘আমরা অর্ধেক ইউনিয়নেও চেয়ারম্যান প্রার্থী দিতে পারিনি। আমাদের ২৮৯ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছে।’
তবে দলটির ইউপি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতী সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলামেইলকে বলেছেন, দলটি ৪৮৭ প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে কতজন মনোনয়ন দাখিল করেছে, তার হিসাব এখনও হাতে আসেনি। মঙ্গলবার বলতে পারবেন।
২৮৯টি ইউপিতে প্রার্থীর কথা বলা হলে ফয়সাল বলেন, ‘আমি মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলব।’
এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।