ঢাকার একটি কলেজের বিকম পড়ুয়া ছাত্রী জুঁই (প্রকৃত নাম নয়)। নিজ গ্রামের এক প্রতিবেশী নারী তার সঙ্গে ভাব জমিয়ে তোলে। সে তাকে লোভ দেখায় মুম্বইয়ের অভিজাত হোটেলে ভাল বেতনে চাকরির। সেই প্রলোভনে পা দেয় জুঁই। গ্রামের ওই নারীই তাকে নিয়ে যায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। তুলে দেয ৩০ বছর বয়সী এক পুরুষের হাতে। বলে, সেই তাকে ভারতে নিয়ে যাবে। ওই ব্যক্তির সহায়তায় জুঁই প্রথমে যায় কলকাতায়। সেখানে তাকে তুলে দেয়া হয় আরেক ব্যক্তির হাতে। এই ব্যক্তিই তাকে নিয়ে যায় কলকাতা থেকে কল্যাণীতে। সেখানে জুঁইকে তুলে দেয়া হয় খান নামের এক ব্যক্তির হাতে। এরপরই শুরু হয় জুঁইয়ের জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার সময়। তাকে নামানো হয় দেহ ব্যবসায়। সম্প্রতি মুম্বই থেকে উদ্ধার করা ২০ বছর বয়সী জুঁইকে মুম্বইয়ের ভিবান্দি থেকে। গ্রেপ্তার করা হয় এক দম্পতি ও বাংলাদেশী এক এজেন্টকে। তারা হলো শাহিদ ও তার স্ত্রী ডালিয়া আনসারি। বাংলাদেশী এজেন্ট হলো বাবু আলী খান। এনজিও রেসকিউ ফাউন্ডেশনের অশোক রাজগর বলেছেন, জুঁইকে দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে দেহ ব্যবসা সাজিয়েছিল গ্রেপ্তারকৃতরা। উদ্ধার হওয়ার পর জুঁই জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে সব কাহিনী। বলেছে, তাকে ৩০ হাজার রুপিতে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল প্রথম ক্রেতার কাছে। গত বৃহস্পতিবার থানে ক্রাইম ব্রাঞ্চের মানব পাচার বিরোধী সেল ও রেসকিউ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে জুঁইকে উদ্ধার করে। এরপরই তিনি জানিয়েছেন, তাকে কয়েকদিন আটকে রাখা হয় ভিবান্দিতে। তারপরই নাগপুরে এক ক্রেতার কাছে তাকে ৩০ হাজার রুপিতে বিক্রি করে দেয়া হয়। নাগপুরে থাকার সময় তাকে বাধ্য করা হয় দেহব্যবসা করতে। এর এক মাস পরে তাকে আবার নিয়ে যাওয়া হয় ভিবান্দিতে। রাখা হয় বিভিন্ন স্থানে। নেয়া হয় ড্যান্স বারে। ভিবান্দি বাইপাস, শিল পাটা, মানপাড়া, উল্লাসনগর, থানে ও তালোজায় নিয়ে তাকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। নাচানো হয় ড্যান্স বারে। দেহ ব্যবসার জন্য এ এলাকাগুলোর কুখ্যাতি আছে। সেখানে মাশরুমের মতো গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন লজ ও অবৈধ ড্যান্স বার। এগুলো দেহব্যবসাকে উসকে দিচ্ছে। এসব স্থানে ঘেরাও দেয়া সত্ত্বেও পুলিশ পাচারকারী ও মূল হোতাদের ধরে কালেভদ্রে।