চীনকে পরাস্ত করে খুলনায় কয়লা চালিত বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের বড় একটি কাজ পাচ্ছে ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড (বিএইচইএল)। ১৬০ কোটি ডলারের এ বিদ্যুত কেন্দ্রের চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা শিগগিরই। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে খুলনায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতা চলছিল এ অঞ্চলের দুই প্রধান শক্তি ভারত ও চীনের মধ্যে। সেই লড়াইয়ে চীনকে পরাস্ত করেছে ভারতের বিএইচইএল। বেশ কয়েক বছরের বোঝাপড়ার পর এ বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি হতে যাচ্ছে আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারি। এ কথা বলেছেন নয়া দিল্লি ও ঢাকার কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, শ্রীলংকায় উন্নয়নমুলক বিভিন্ন প্রকল্পে সাম্প্রতিক সময়ে সফলতা দেখিয়েছে চীন। এর মাধ্যমে তারা এ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের একটি প্রচেষ্টা দেখিয়েছে। একই সঙ্গে খুলনায় এ প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ভারত তাদেরকে সফল হতে দেয় নি। বাংলাদেশের এ কাজটি পাওয়ার খবর ভারতীয় কর্মকর্তাদের জন্য নিশ্চয় একটি সুখবর বয়ে আনবে, যারা বেইজিংয়ের অগ্রযাত্রায় এতদিন অস্বস্তিতে ছিলেন। ভারত বিশ্বাস করে চীন ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় যে ‘মুক্তোর মালা’ গড়ে তুলছে বাংলাদেশ তার অংশ। এই মুক্তোর মালা পাকিস্তানের গোয়াদার বন্দর থেকে আফ্রিকার উপকূল জিবুতি পর্যন্ত বিস্তৃত। বাংলাদেশী এক কর্মকর্তা বলেছেন ইরান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া সহ বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুত প্রকল্প রযেছে চীনের হারবিন ইলেকট্রিক ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডের। টেকনিক্যাল কারণে তারা বাংলাদেশের এই প্রকল্পের কাজ পাওয়ার সুযোগ হারিয়েছে। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের মুখপাত্র আনওয়ারুল আজিম বলেন, এ কাজের সর্বনিম্ন দরদাতা ছিল বিএইচইএল। ভারত সরকারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ভারত সরকারের বৈদেশিক বিনিয়োগে সহায়ক এক্সিম ব্যাংক বিএইচইএল’কে প্রকল্পের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ অর্থ দেয়ার প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে। এক্ষেত্রে শতকরা প্রায় ১ ভাগ সুদ ধরা হবে। খুলনা প্রকল্প নিয়ে এই ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড রাসকুউনহা বলেন, এ প্রকল্প নিয়ে এক্সিম ব্যাংক খুবই ইতিবাচক ভূমিকায়। এ প্রকল্প এগিয়ে নিতে চাই আমরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খুলনায় এ বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের কাজ হবে ভারতের কোন বিদ্যুত বিষয়ক সংস্থার সবচেয়ে বড় বৈদিশেক প্রকল্প। তাদের প্রকল্প রয়েছে রোয়ান্ডায়, শ্রীলংকায়। তবে বাংলাদেশের এ প্রকল্প সব থেকে বড়। এ বিষয়ে চীনের হারবিন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু মন্তব্য করার জন্য কাউকে পাওয়া যায় নি। তবে আফটার-সেল সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের একজন কর্মচারী বলেছেন, এমন অনেক টেন্ডারে জড়িত এ কোম্পানি। তাতে কাজ পাওয়া যেতেও পারে না-ও যেতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়।