ঢাকা : বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতি স্মরণ করছে ভাষাশহীদদের। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি, যাদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি পেয়েছিল মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার, সেইসব শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে লাখো মানুষ।
রাতের প্রথম প্রহরে শহীদের স্মৃতির এ মিনারে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
পরে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার খুলে দেয়া সর্বসাধারণের জন্য। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় বরকত, রফিক, শফিক, ছালাম, জব্বার, সফিউরসহ নাম না জানা ভাষা শহীদদের স্মৃতির এ মিনার। সবার মুখে অবিনাশী সেই গান ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’।
রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামসহ সারা দেশে প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের হাজারো মানুষ।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের এই দিনে বুকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। তাজা রক্তের দামে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল বাংলা। সে পথ ধরে ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আসে স্বাধীনতা।
ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাঙালির এই আত্মত্যাগ স্বীকৃতি পেয়েছে বিশ্বজুড়ে। একুশ এখন শুধু বাঙালি কিংবা বাংলাদেশের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই। দিনটি এখন সারা বিশ্বে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
একুশে ফেব্রুয়ারি শোকগাথার হলেও বাঙালি এ দিনটিকে উদযাপন করে অহংকারের দিন হিসেবে। সরকারি ছুটি থাকলেও নানা কর্মসূচিতে দিনটি পালিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাতের প্রথম প্রহরে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ কর্মসূচি।
একুশে ফেব্রুয়ারি সাধারণ ছুটির দিন। ভাষাশহীদদের স্মরণে অর্ধনমিত রাখা হয় জাতীয় পতাকা।