বাংলাদেশ থেকে নতুন করে ১৫ লাখ শ্রমিক নেয়া নিয়ে মালয়েশিয়ায় যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে উপপ্রধানমন্ত্রী ড. আহমেদ জাহিদ হামিদির সঙ্গে আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। ক্যালিফোর্নিয়ায় ৬ দিনের সফর শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন। ওদিকে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার খবরে মালয়েশিয়ায় একরকম আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও মিডিয়া বাংলাদেশিবিরোধী সেন্টিমেন্ট ছড়িয়ে দিয়েছে। তারা বর্ণবাদ, অপরাধের আতঙ্ক এবং অর্থনৈতিক উদ্বেগ ছড়িয়ে দিচ্ছে। বুধবারও পুর্তুবুহান রাপাত মালয়েশিয়া নামে একটি গ্রুপ বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তারা অভিবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে। বলেছে, এসব শ্রমিক ধর্ষণে জড়িত হয়ে পড়ে। এছাড়া অভিবাসী শ্রমিক, বিশেষ করে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে তারা। তবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বলেছেন, আমরা যা করছি তা আমাদের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণের জন্য। বৃক্ষায়ন শিল্পের মতো বিভিন্ন খাতে সস্তায় শ্রমিক প্রয়োজন অনেক ক্ষেত্রে। এ খবর দিয়ে মালয়েশিয়ার পত্রিকা নিউ স্ট্রেইটস টাইমস লিখেছে, এ মাসের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সরকার ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এর অধীনে ১৫ লাখ শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে নেয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার মিডিয়ায় এক ধরনের নেতিবাচক ভাবমূর্তি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। মালয় মেইল অনলাইন লিখেছে, এসব শ্রমিকের কাছে আদর্শ হয়ে গেছে স্থানীয় নারীদের ধর্ষণ করা। মালয়েশিয়ায় বিভিন্নজনের স্ত্রী, কন্যাদের ধর্ষণ করে তারা। তারা এমন আচরণ করে যেন তাদের ধর্ষণের লাইসেন্স আছে। এক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে? এমন প্রশ্ন রেখে তারা আরও লিখেছে, এ পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়বে। পুর্তুবুহান রাপাত মালয়েশিয়া গ্রুপের সভাপতি বলেছেন, বিদেশি শ্রমিকরা শুধুই তাদের দেশে রোগ বহন করে নিয়ে যান। তারা সন্ত্রাসী হয়ে ওঠার ঝুঁকিও আছে। বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে এমন প্রচারণা শুধু পুর্তুবুহান রাপাত মালয়েশিয়া একাই চালাচ্ছে তা নয়। অভিবাসীবিরোধী প্রবণতা মালয়েশিয়ার সমাজের গভীরে প্রোথিত। একটি অনলাইন লিখেছে, বাংলাদেশি শ্রমিকরা দীর্ঘদিন মিথ্যা অভিযোগের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন। মালয়েশিয়ায় বেকারত্ব থেকে শুরু করে যে কোনো অপরাধের জন্য তাদের দায়ী করা হয়। এতে উসকানি দিচ্ছে কিছু মিডিয়া। একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে একজন টিনেজ মেয়েকে বাংলাদেশি এক শ্রমিক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনা তুলে ধরে তারা বলেছে, নতুন করে ১৫ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক যখন মালয়েশিয়ায় যাবেন তখন এ ধরনের আরও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটার যৌক্তিক কারণ আছে।