দাম কম তাই চাল-গমের পরিবর্তে টাকা চান সাংদরা

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

 

2016_02_19_02_42_16_TDxPE1ZkctQyPB9U9LmegRwrJm2YL0_original

 

 

 

 

 

ঢাকা : গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সংসদ সদস্যদের জন্য দ্বিতীয় কিস্তি বরাদ্দ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তবে এতোদিন কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচির আওতায় গম অথবা চাল বরাদ্দ হয়ে আসলেও এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। কারণ বাজারে এখন চাল ও গমের দাম কমে যাওয়ায় সংসদ সদস্যরা আর এসব খাদ্য পণ্য নিতে চান না। তারা চান নগদ টাকা। অর্থাৎ কাবিখা এখন প্রায় কাবিটায় পরিনত হয়েছে।

জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ মো. কামাল  বলেন, ‘কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচিতে মূলত এক টন গমের মূল্য ৩৬ হাজার টাকা ধরা হয়। কিন্ত বাজার মূল্য এর চেয়ে অনেক কম। তাই সরকার চাল কিংবা গমের পরিবর্তে টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তিনি জানান, অবশ্য সব ক্ষেত্রেই যে টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে তা নয়। যেসব ক্ষেত্রে খাদ্য বরাদ্দ করে কাজ করা যায় সেখানে খাদ্যই বরাদ্দ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি সংসদ সদস্যকে তার জন্য বরাদ্দের অর্ধেক টাকা এবং বাকি অর্ধেক পরিমাণ গম অথবা চাল বরাদ্দ করা হচ্ছে। বাজারে চাল ও গমের দাম কমে যাওয়ার কারণেই এটা করতে হচ্ছে বলে জানান সচিব।

এদিকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্বাচনী এলাকা ভিত্তিক সংসদ সদস্যদের অনুকূলে অর্থের বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকা ব্যাতীত ২৭৭টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারে কাবিটা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতি আসনের জন্য ৩০০ মেট্রিকটন গম হিসেবে মোট (৩০০ X ২৯১৭৮.৫৯) = ৮৭ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৭ টাকা বরাদ্দ করা হয়। আর ৫০টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য বরাদ্দ করা হয় ১০০ টন গম হিসেবে (১০০ X ২৯১৭৮.৫৯) = ২৯ লাখ ১৭ হাজার ৮৫৯ টাকা। অর্থাৎ ২৭৭টি সাধারণ আসন এবং ৫০টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য ২৫৭ কোটি ৯৬ লাখ ৩৩ হাজার ৭৭৯ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

এসব বরাদ্দ দিয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন, বিশেষ করে ধর্মীয়, শিক্ষা, জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও মেরামত করার কথা বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, বরাদ্দকৃত অর্থের ৫০ শতাংশ অর্থ সোলার প্যানেল ও বায়োগ্যাস প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যায় করতে হবে। কাজ সম্পন্ন করার জন্য আগামী ১৫ মে নির্ধারণ করা হয়েছে।

একই তারিখে পৃথক আদেশে আংশিক সিটি করপোরেশনভুক্ত নির্বাচনী এলাকায় ১ কোটি ২৯ লাখ ৪৬ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই বরাদ্দের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম করা হয়েছে।

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আরেক আদেশে কাবিখা কর্মসূচির আওতায় ৬৪ জেলার ৪৯০টি উপজেলার জন্য ৩৫ হাজার মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়েছে। যার টাকার অংকে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০২ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রেও অবকাঠামো উন্নয়ন বিশেষ করে ধর্মীয়, শিক্ষা ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের মেরামত ও উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবছর দুই বার এ ধরনের বরাদ্দ প্রদান করা হয়। আর এই বরাদ্দের কাজে ব্যাপক দুর্নীতিও হয়ে থাকে। অনেকেই বলে থাকেন দলীয় কর্মীদের পোষার বরাদ্দ এটি। তারপরও এসব বরাদ্দের ফলে অনেক উপকার হয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীসহ অবকাঠামো খাতে।

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের নামে লুটপাট হয় এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব শাহ মো. কামাল বলেন, ‘এটা ঢালাওভাবে বলা ঠিক না। যে কোনো ব্যক্তি এসব বিষয়ে অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *