স্টাফ করেসপনডেন্ট
গাজীপুর অফিস: কারাখানায় কর্মরত অবস্থায় মাল্টি ফেবস লিঃ থেকে অপহরণ হওয়ার ৪দিনের মাথায় উদ্ধার হয়েছেন পোষাক শ্রমিক মেহেদী হাসান(২৮)। ভিকটিম বতমানে জয়দেবপুর থানা হাজতে রয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে তাকে থানা হাজতে রাখা হয়।
জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদশক(এসআই) মিজানুর রহমান জানান, ভিকটিম হাজতে রয়েছেন।
ভিকটিমের পারিবারিক সুত্র জানায়, সোমবার রাতে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় রাস্তার পাশে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকার পর এলাকাবাসীর সংবাদের ভিত্তিতে মেহেদী হাসানের চাচা নজরুল ইসলাম ও বড় ভাই মোঃ ইব্রাহিম তাকে উদ্ধার করেন। বিষয়টি সম্পর্কে থানায় তিন দিন পর মামলা না নিয়ে জিডি নেয়ায় ভিকটিমকে জয়দেবপুর থানায় নিয়ে যায় তার পরিবার।
গোপন সূত্র বলছে, মালিক পক্ষ পুলিশকে ম্যানেজ করে ভিকটিমের বিরুদ্ধে গার্মেন্ট ভাংচূরের মামলা দেয়ার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে শ্রমিক লুকিয়ে থেকে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে অপহরনের মিথ্যা অভিযোগ করেছেন মর্মে স্বাীকারোক্তি করানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
এদিকে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেছেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিকটিমকে জেলা সদরের মাস্টার বাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ভিকটমের সহকর্মী শ্রমিকদের দাবি ছিল, মালিক পক্ষের লোকজন তাকে গুম করেছে। মেহেদি গুম হবার খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই কারখানায় গত দু’দিন ধরে কর্মবিরতি চলে। পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। এ অবস্থায় সোমবার বিকালে কারখানাটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোঘণা করা হয়। ওই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবারও কারখানাটি বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার গেইটে গেলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
মেহেদী হাসানের দুলাভাই গাজীপুর বারের শিক্ষানবীশ আইনজীবী মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, তার শ্যালক মেহেদী হাসান(২৮) গাজীপুরে থেকে মাল্টি ফেবস লিঃ এ কাটিংম্যান পদে চাকুরী করতেন। মেহেদীর পিতার নাম নাজিম উদ্দিন। গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার গোপালপুর গ্রামে। শনিবার সকালে মেহেদী হাসান যথারীতি কারখানায় যায়। মাসিক বেতন নিয়ে দুপুরে বাইরে যোহরের নামাজ পড়ে আবার কর্মস্থলে প্রবেশ করেন। শনিবার রাতে তিনি আর বাসায় ফিরেন নি।
হাফিজ জানান, রোববার কারখানায় গিয়ে জানা গেছে, কারখানার পাঞ্চ সেকশনে(পরিচয়পত্র পরীক্ষন ইউনিট) মেহেদী হাসান কারখানায় প্রবেশ করার পর বারিয়ে গেছেন মর্মে কর্তৃপক্ষের নিকট কোন তথ্য প্রমান নেই। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ কোন কথা বলতেও রাজি হননি।
হাফিজ আরো জানান, কিছু দিন ধরে মেহেদীর সহকর্মী কাটিং ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম ও কাটিং ইনচার্জ লিটন মিয়ার সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিলো। শনিবার কারখানা কর্তৃপক্ষ বিচার করে রফিকুল ইসলামকে চাকুরীচ্যুত করেন। চাকুরীচ্যুতির পর রফিকুল ইসলাম মেহেদী হাসানকে ২/৩ লাখ টাকা খরচ করে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয় মর্মে সংবাদটি মোবাইল ফোনে মেহেদী হাসান তার পরিবারকে জানায়।