সারা দেশে প্রতিদিন গড়ে একটি করে শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। দিনে দিনে বাড়ছে খুনের এই পরিসংখ্যান। ভয়াবহ নির্মমতার শিকার হচ্ছে শিশুরা। বাবা-মায়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে টার্গেট করা হচ্ছে শিশুদের। অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের জন্য বলি হতে হচ্ছে শিশুদের। নিজেকে রক্ষার জন্য ধর্ষণের পরও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক কলহ, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, ব্যক্তিগত লোভ-লালসা কিংবা স্বার্থ আদায় করার জন্য টার্গেট করা হচ্ছে শিশুদের। গতকাল হবিগঞ্জের বাহুবল এলাকায় নির্মমতার বলি হয়েছে চার শিশু। হত্যার পর এক সঙ্গে বালিচাপা দিয়ে রাখা হয় তাদের। এর একদিন আগে গাজীপুরে হত্যা করা হয় এক শিশুকে।
চলতি মাসের ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৭ দিনেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে অন্তত ১৪ শিশু। গত মাসে এই সংখ্যা ছিল ২৯টি। এই হিসাবে সারা দেশে প্রতিদিন গড়ে ঝরে পড়ছে একটি কোমলমতি শিশুর প্রাণ। এর বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটছে। শিশু হত্যা বন্ধে বেগ পেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। কেরানীগঞ্জের আলোচিত শিশু আব্দুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত মোতাহার র্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। গত বছরের আলোচিত দুই ঘটনা সিলেটের শিশু রাজন হত্যা ও খুলনায় শিশু রাকিব হত্যায় দ্রুত বিচার শেষে আদালত খুনিদের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে। এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনেও কমছে না শিশুদের ওপর নির্মমতা। পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘শিশুদের টার্গেট করা নতুন একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। সহজেই টার্গেট করা যায় বলে দুর্বৃত্তরা শিশুদের টার্গেট করছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী শিশু হত্যা বা অপহরণ সম্পর্কিত ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য সচেষ্ট রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শিশুরা যেন কোনো ধরনের টার্গেটে পরিণত না হয় সেজন্য সমাজের সবাইকে সচেতন হতে হবে। যে কোনো ধরনের অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তবেই সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব হবে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের প্রথম দেড় মাসে একের পর এক শিশু হত্যার ঘটনা অতীতের যে কোনো সময়কে হার মানিয়েছে। বাংলাদেশ শিশু ফোরামের তথ্যমতে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চার বছরে সারা দেশে ১ হাজার ৮৫ জন শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। এর মধ্যে ২০১২ সালে ২০৯টি শিশু, ২০১৩ সালে ২১৮টি শিশু, ২০১৪ সালে ৩৬৬টি শিশু ও ২০১৫ সালে ২৯২টি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। বেশিরভাগ শিশুকেই হত্যা করা হয়েছে অপহরণের পর। পারিবারিক শত্রুতা বা অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে টার্গেট করা হয় শিশুদের। কোমলমতি শিশুরাই হলো যে কোনো পরিবারের সবচেয়ে ভালোবাসার ধন। একারণে পরিবারের প্রতি জিঘাংসা মেটাতে বেছে নেয়া হয় শিশুদের।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো শিশুদের সহজেই টার্গেট করা যায়। নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে শিশুদের অপহরণ করাও সহজ। আর একটি শিশু নিজ পরিবারের অন্যতম প্রধান মূল্যবান ধন। একারণে পরিবার বা বাবা-মায়ের প্রতি প্রতিশোধ নিতেই শিশুদের টার্গেট করা হচ্ছে। এছাড়া, অপহরণ করে অর্থ আদায়ের মতো ঘটনা তো ঘটছেই। মেয়ে শিশুরা শিকার হচ্ছে ধর্ষণের। ধর্ষণের পর ধর্ষকের পরিচয় ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে অনেকক্ষেত্রে হত্যা করা হয়। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে এখন চরম নৈরাজ্যকর অবস্থা চলছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও গত বছরের আলোচিত দুটি ঘটনার দ্রুত বিচার সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বছরের পর বছর বিচার ঝুলে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কারণে খুনিরা পার পেয়ে যায়। পার পায় অর্থের বিনিময়েও। এছাড়া গরিব পরিবারকে অর্থ দিয়ে খুনিরা আপস করারও চেষ্টা করে অনেক ক্ষেত্রে।
মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ও অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, শিশুরা টার্গেট হওয়ার কারণ হলো শিশুদের সাধারণত প্রতিরোধ করার সক্ষমতা থাকে না। একারণে অপরাধীরা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শিশুদের টার্গেট করে থাকে। কারণ হলো, যে কোনো শিশুই তার বাবা-মা বা আত্মীয়স্বজনের কাছে প্রিয়পাত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। অপরাধীরা শিশুদের জিম্মি করতে পারলে খুব সহজেই তাদের স্বার্থসিদ্ধ করতে পারে।’ তিনি বলেন, শিশু হত্যা বা শিশুদের প্রতি সব ধরনের অপরাধ দমন করার জন্য রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশু অপরাধের ঘটনাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজর দিতে হবে। সর্বোপরি সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলেই শিশুদের প্রতি ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনাগুলো ঠেকানো সম্ভব হবে।
কয়েকটি ঘটনা: গতকালই হবিগঞ্জের বাহুবলে চার শিশুকে হত্যার পর মাটিচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। ১৬ই ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে এক শিশুকে হত্যা করা হয়। ১৪ই ফেব্রুয়ারি পাবনায় দুই শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা করে এক নারী। ৩রা ফেব্রুয়ারি বরিশালের গৌরনদীতে কবিতা নামে এক শিশু ও পঞ্চগড়ে আম্বিয়া নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১লা ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জে এক শিশুকে হত্যা করে তার মা। ৩১ শে জানুয়ারি কেরানীগঞ্জে আব্দুল্লাহ নামে এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। তিনদিন পর তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩০শে জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ সদরের মালির পাথর এলাকার একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে নীরব (১১) নামের এক মাদরাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিখোঁজ হওয়ার দুই মাস পর ২৮শে জানুয়ারি মিঠাপুকুরের একটি জমির গর্ত খুঁড়ে পুলিশ শিশু রাহিমুল ইসলামের (১১) লাশ উদ্ধার করে। ২৪শে জানুয়ারি রামপুরা এলাকার শিশু গৃহকর্মী মুন্নী আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ১৯শে জানুয়ারি কক্সবাজারের রামুর বড়বিল গ্রামের একটি ফলের বাগান থেকে মোহাম্মদ শাকিল (১০) ও মোহাম্মদ কাজল (৯) নামের দুই সহোদরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৬ই জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের ২ নম্বর বাবুরাইলে পাঁচজনকে হত্যা করা হয়। তাদের মধ্যে শান্ত (৫) ও সুমাইয়া (৫) নামের দুই শিশুও ছিল। নিখোঁজের এক মাস পর গাজীপুরে ৯ই জানুয়ারি রাব্বি হোসেন নামের তিন বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একইভাবে নিখোঁজের পর কুমিল্লার তাহমিনা ও মনিকা, গাইবান্ধার মশিউর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লায়লা হোসেন ও তাসলিমা বেগম, নাটোরের খানজাহান ও নরসিংদীর তাপস বিশ্বাসের লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ৫ই জানুয়ারি একদিনেই দেশে ছয় শিশুকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে গাজীপুরের টঙ্গীতে চোর সন্দেহে মোজাম্মেল হক নামে এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঢাকায় রানা নামের এক শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে তার সৎবাবা। আর চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে নিহত হয় আজিম হোসেন। সিলেট ও যশোরে অপহরণের পর সালমান ও লিমাকে হত্যা করা হয়। ৩রা জানুয়ারি ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পারিবারিক কলহের জের ধরে ইকবাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি নিজের ভাই ও বোনের তিন সন্তান শিবলু, আমিন ও মাহিনকে পুড়িয়ে হত্যা করে।
চলতি মাসের ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৭ দিনেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে অন্তত ১৪ শিশু। গত মাসে এই সংখ্যা ছিল ২৯টি। এই হিসাবে সারা দেশে প্রতিদিন গড়ে ঝরে পড়ছে একটি কোমলমতি শিশুর প্রাণ। এর বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটছে। শিশু হত্যা বন্ধে বেগ পেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। কেরানীগঞ্জের আলোচিত শিশু আব্দুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত মোতাহার র্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। গত বছরের আলোচিত দুই ঘটনা সিলেটের শিশু রাজন হত্যা ও খুলনায় শিশু রাকিব হত্যায় দ্রুত বিচার শেষে আদালত খুনিদের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে। এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনেও কমছে না শিশুদের ওপর নির্মমতা। পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘শিশুদের টার্গেট করা নতুন একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। সহজেই টার্গেট করা যায় বলে দুর্বৃত্তরা শিশুদের টার্গেট করছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী শিশু হত্যা বা অপহরণ সম্পর্কিত ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য সচেষ্ট রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শিশুরা যেন কোনো ধরনের টার্গেটে পরিণত না হয় সেজন্য সমাজের সবাইকে সচেতন হতে হবে। যে কোনো ধরনের অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তবেই সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব হবে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের প্রথম দেড় মাসে একের পর এক শিশু হত্যার ঘটনা অতীতের যে কোনো সময়কে হার মানিয়েছে। বাংলাদেশ শিশু ফোরামের তথ্যমতে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চার বছরে সারা দেশে ১ হাজার ৮৫ জন শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। এর মধ্যে ২০১২ সালে ২০৯টি শিশু, ২০১৩ সালে ২১৮টি শিশু, ২০১৪ সালে ৩৬৬টি শিশু ও ২০১৫ সালে ২৯২টি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। বেশিরভাগ শিশুকেই হত্যা করা হয়েছে অপহরণের পর। পারিবারিক শত্রুতা বা অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে টার্গেট করা হয় শিশুদের। কোমলমতি শিশুরাই হলো যে কোনো পরিবারের সবচেয়ে ভালোবাসার ধন। একারণে পরিবারের প্রতি জিঘাংসা মেটাতে বেছে নেয়া হয় শিশুদের।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো শিশুদের সহজেই টার্গেট করা যায়। নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে শিশুদের অপহরণ করাও সহজ। আর একটি শিশু নিজ পরিবারের অন্যতম প্রধান মূল্যবান ধন। একারণে পরিবার বা বাবা-মায়ের প্রতি প্রতিশোধ নিতেই শিশুদের টার্গেট করা হচ্ছে। এছাড়া, অপহরণ করে অর্থ আদায়ের মতো ঘটনা তো ঘটছেই। মেয়ে শিশুরা শিকার হচ্ছে ধর্ষণের। ধর্ষণের পর ধর্ষকের পরিচয় ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে অনেকক্ষেত্রে হত্যা করা হয়। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে এখন চরম নৈরাজ্যকর অবস্থা চলছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও গত বছরের আলোচিত দুটি ঘটনার দ্রুত বিচার সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বছরের পর বছর বিচার ঝুলে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কারণে খুনিরা পার পেয়ে যায়। পার পায় অর্থের বিনিময়েও। এছাড়া গরিব পরিবারকে অর্থ দিয়ে খুনিরা আপস করারও চেষ্টা করে অনেক ক্ষেত্রে।
মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ও অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, শিশুরা টার্গেট হওয়ার কারণ হলো শিশুদের সাধারণত প্রতিরোধ করার সক্ষমতা থাকে না। একারণে অপরাধীরা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শিশুদের টার্গেট করে থাকে। কারণ হলো, যে কোনো শিশুই তার বাবা-মা বা আত্মীয়স্বজনের কাছে প্রিয়পাত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। অপরাধীরা শিশুদের জিম্মি করতে পারলে খুব সহজেই তাদের স্বার্থসিদ্ধ করতে পারে।’ তিনি বলেন, শিশু হত্যা বা শিশুদের প্রতি সব ধরনের অপরাধ দমন করার জন্য রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশু অপরাধের ঘটনাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজর দিতে হবে। সর্বোপরি সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলেই শিশুদের প্রতি ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনাগুলো ঠেকানো সম্ভব হবে।
কয়েকটি ঘটনা: গতকালই হবিগঞ্জের বাহুবলে চার শিশুকে হত্যার পর মাটিচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। ১৬ই ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে এক শিশুকে হত্যা করা হয়। ১৪ই ফেব্রুয়ারি পাবনায় দুই শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা করে এক নারী। ৩রা ফেব্রুয়ারি বরিশালের গৌরনদীতে কবিতা নামে এক শিশু ও পঞ্চগড়ে আম্বিয়া নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১লা ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জে এক শিশুকে হত্যা করে তার মা। ৩১ শে জানুয়ারি কেরানীগঞ্জে আব্দুল্লাহ নামে এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। তিনদিন পর তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩০শে জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ সদরের মালির পাথর এলাকার একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে নীরব (১১) নামের এক মাদরাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিখোঁজ হওয়ার দুই মাস পর ২৮শে জানুয়ারি মিঠাপুকুরের একটি জমির গর্ত খুঁড়ে পুলিশ শিশু রাহিমুল ইসলামের (১১) লাশ উদ্ধার করে। ২৪শে জানুয়ারি রামপুরা এলাকার শিশু গৃহকর্মী মুন্নী আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ১৯শে জানুয়ারি কক্সবাজারের রামুর বড়বিল গ্রামের একটি ফলের বাগান থেকে মোহাম্মদ শাকিল (১০) ও মোহাম্মদ কাজল (৯) নামের দুই সহোদরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৬ই জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের ২ নম্বর বাবুরাইলে পাঁচজনকে হত্যা করা হয়। তাদের মধ্যে শান্ত (৫) ও সুমাইয়া (৫) নামের দুই শিশুও ছিল। নিখোঁজের এক মাস পর গাজীপুরে ৯ই জানুয়ারি রাব্বি হোসেন নামের তিন বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একইভাবে নিখোঁজের পর কুমিল্লার তাহমিনা ও মনিকা, গাইবান্ধার মশিউর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লায়লা হোসেন ও তাসলিমা বেগম, নাটোরের খানজাহান ও নরসিংদীর তাপস বিশ্বাসের লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ৫ই জানুয়ারি একদিনেই দেশে ছয় শিশুকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে গাজীপুরের টঙ্গীতে চোর সন্দেহে মোজাম্মেল হক নামে এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঢাকায় রানা নামের এক শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে তার সৎবাবা। আর চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে নিহত হয় আজিম হোসেন। সিলেট ও যশোরে অপহরণের পর সালমান ও লিমাকে হত্যা করা হয়। ৩রা জানুয়ারি ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পারিবারিক কলহের জের ধরে ইকবাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি নিজের ভাই ও বোনের তিন সন্তান শিবলু, আমিন ও মাহিনকে পুড়িয়ে হত্যা করে।