ঢাকা : নাশকতার তিন মামলায় হাইকোর্টের দেয়া তিন মাসের জামিনাদেশ চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করা আপিলের আদেশ আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি।
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেন।
গত ১৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তিনি এ আবেদনটি দায়ের করেন। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম।
আদালতে ফখরুলের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুরাদ রেজা। বিষয়টি জানিয়েছেন ফখরুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন।
তিনি বলেন, ‘কাস্টমস অনুযায়ী কোনো বিচারাধীন মামলায় উচ্চ আদালত কোনো আসামিকে জামিন দিলে সেটি হয় সাধারণত স্থায়ী জামিন। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ব্যাপারে কেন তিন মাসের জামিন দেয়া হলো, সে বিষয়টি আমরা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে চ্যালেঞ্জ করে আপিল দায়ের করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই তিন মামলায় আদালত মির্জা ফখরুলকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়ে একটি রুল দিয়েছিলেন। সে আদেশে বলা ছিল কেন এসব মামলায় মির্জা ফখরুলকে স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না। অথচ সেই আদালতই আবার তাকে তিন মাসের জামিন দিল, কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হলো না, এ বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা একটি লিভ টু আপিল দায়ের করেছিলাম।’
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপি ও তার শরিকদলের হরতাল-অবরোধের ঘোষণা দেয়। সে ঘোষণার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে আটক হন মির্জা ফখরুল। পরে তাকে নাশকতার অভিযোগে ৭টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সে মামলাগুলোতে বিচারিক আদালতে জামিন না পেয়ে উচ্চ আদালতের দারস্থ হন বিএনপির এ নেতা। জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে উচ্চ আদালত তাকে পল্টন ও মতিঝিল থানায় দায়ের করা তিন মামলায় ছয়মাসের জামিন দেয়ার পাশাপাশি কেন তাকে স্থায়ী জামিন দেয়া হবে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি আবারো বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর তিনি আবারো উচ্চ আদালতে আসলে জামিন পেয়ে যান। জামিন নিয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যান।
কয়েকবার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে নেন। এক পর্যায়ে তিনি আবারো জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলে আপিল সেটি গ্রহণ না করে তাকে কারাগারে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আবারো সেটি না মঞ্জুর করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফখরুল ফিরে আসেন উচ্চ আদালতে, জামিন পান তিন মাসের।