ঢাকা : বহুল আলোচিত হলমার্কের মানি লন্ডারিংয়ের দুই মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক তানভীর মাহমুদ এবং চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচারকার্য শুরু করেছেন আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। যার মধ্য দিয়ে এ বিচার শুরু হয়।
এদিন আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করা হলেও বিচারক তা নাকচ করে দেন। আগামী ৩ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
এদিকে, সম্পদের হিসাব দাখিল না করার মামলায়ও গ্রুপটির চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে ৩ মার্চই সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলাগুলোর আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আরিফুর রহমান খান বলেন, ‘মানি লন্ডারিংয়ের ১১টি মামলার মধ্যে ৯টি মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছেন গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ। তিনি মামলাটিতে মানি লন্ডারিং আইনের ৩(২) ধারা তার জন্য প্রযোজ্য নয় উল্লেখ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে হাইকোর্ট রুলও জারি করেছেন।’
বিষয়টি বুধবার আদালতকে জানানো হলে আদালত ওই ৯ মামলার চার্জশুনানি আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করেন। অপর ২ মামলায় তুষার আহমেদের নাম না থাকায় অন্যদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়।
চার্জগঠন হওয়া অন্য আসামিরা হলেন, হলমার্কের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম মীর মহিদুর রহমান, দুই উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শেখ আলতাফ হোসেন (সাময়িক বরখাস্ত) ও মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, ডিএমডি আতিকুর রহমান (বর্তমানে ওএসডি), হলমার্ক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শহিদুল ইসলাম, স্টার স্পিনিং মিলসের মালিক মো. আব্দুল বাছির, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো. জিয়াউর রহমান, আনোয়ারা স্পিনিং মিলসের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক, সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম ননী গোপাল নাথ (বর্তমানে ওএসডি), প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, ডিএমডি মাইনুল হক (বর্তমানে ওএসডি), দুই এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান (সাময়িক বরখাস্ত) ও এজাজ আহম্মেদ, সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন ও সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার বর্তমান জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি।
আসামিদের মধ্যে তানভীর মাহমুদ, মীর মহিদুর রহমান, শেখ আলতাফ হোসেন ও মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ কারাগারে আছেন। জামিনে আছেন জেসমিন ইসলাম ও আতিকুর রহমান।
এর আগে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর পলাতক ১৭ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় তানভীর মাহমুদসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।