ঢাকা: দশবারের চেষ্টায় অবশেষে বিচার শুরু হলো আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় তার স্ত্রী-পুত্র, আইনজীবীসহ মোট সাত জনের।
সোমবার ঢাকায় অবস্থিত দেশের একমাত্র সাইবার ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে অভিযোগ (চার্জ) গঠিত হয়। চার্জ গঠন শেষে বিচারক সামছুল আলম আগামী ২৮ মার্চ সাক্ষ্যর জন্য দিন ধার্য করেন।
এদিন আসামিদের পক্ষে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হলেও বিচারক নাকচ করে দেন। আসামিদের পক্ষে অন্য আইনজীবীদের সঙ্গে এ মামলার অন্যতম আসামি ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামও শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম শামীম।
চার্জ শুনানিকালে আসামি ফারহাদ কাদের চৌধুরী, ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরী ও ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। এছাড়া ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী ফারুক আহমেদ, নয়ন আলী ও সাকার ম্যানেজার মাহবুবুল আহসানকে জেলহাজত থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন ব্যারিস্টার ফখরুলের জুনিয়র মেহেদী হাসান।
এদিন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ম্যানেজার মাহবুবুল আহসানকে জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে প্রায় একই অজুহাতে (অসুস্থতা) নবমবারেও চার্জ শুনানি করতে পারেননি ট্রাইব্যুনাল।
গত ১৪ জানুয়ারি, ২৯ নভেম্বর, ১৫ অক্টোবর ও ৫ অক্টোবরেও অসুস্থতার অজুহাতে সময়ের আবেদন করেছিলো আসামি পক্ষ।
গত ৫ অক্টোবর হাজিরা দাখিল করেও তা প্রত্যাহার করে নিয়ে অসুস্থতার কারণে ট্রাইব্যুনালে আসতে পারেননি অজুহাতে সময়ের আবেদন দাখিল করেন ফারহাদ কাদের চৌধুরী।
অথচ ওইদিন জামিনে থাকা আসামি সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাদ কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে এসে হাজিরা দাখিল করেছিলেন।
গত ২৮ আগস্ট মামলাটিতে আত্মসমর্পণকৃত দুই আসামিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন গেয়েন্দা পুলিশ ডিবির ইন্সপেক্টর মো. শাহজাহান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
তবে রায় ঘোষণার আগেই সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্য এবং আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা ‘রায়ের খসড়া কপি’ সংবাদকর্মীদের দেখান। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার একেএম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে ওই বছরন ২ অক্টোবর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।
ট্রাইব্যুনালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়ন আলী ও সাঁটলিপিকার ফারুক হোসেন ওই বছর ১০ অক্টোবর নয়ন আলী এবং ১৩ অক্টোবর ফারুক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।