সিলেটে প্রেমহীনদের ব্যতিক্রমী সমাবেশ

Slider জাতীয় বাংলার মুখোমুখি

1306_Valentines-Day-2016-images

 

প্রেমহীন জীবন উপভোগ করলেন সিলেটে তরুণ-তরুণীরা। ভালোবাসার দিনের আগের দিন অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশে তারা কাটালেন সময়। সঙ্গীহীন-বর্ণহীন জীবনের নানা ঘটনা তুলে ধরলেন তারা। এদের মধ্যে কেউ প্রেম করে ছ্যাঁকা খেয়েছেন। কারও প্রেমিক অন্যকে নিয়ে সুখের সংসার গড়েছে। এসব নানা ঘটনা জানালেন প্রেমহীন জীবনের অধিকারীরা। গতকাল সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের একটি টিলার ওপর আয়োজিত সমাবেশে তরুণ-তরুণী এসব কথা তুলে ধরেন। তবে, তারা জানালেন, প্রেম ছাড়া জীবন চলে না। প্রেমহীন জীবনের কোনো অর্থ হয় না। এরপরও সঙ্গীহীনরা খুঁজে ফেরেন জীবনের তাগিদ। আয়োজক সিলেটের কয়েক তরুণের সংগঠন কাকতাড়ুয়া। গতকাল আয়োজন করা হয় নন ভ্যালেনটাইন মহাসমাবেশ। সকাল ১১টায় টিলাগড় পয়েন্ট থেকে মজার মজার স্লোগান নিয়ে ‘সিঙ্গেল শোভাযাত্রা’ বের হয়ে এমসি কলেজের টিলায় গিয়ে শেষ হয়েছে। সেখানেই প্রেমহীনতার জন্য এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে শুরু হয় মূল পর্ব। চলেছে প্রেমের গান, প্রেমের সুফল ও কুফল নিয়ে আড্ডা, প্রেমের অভিজ্ঞতা। সঙ্গী পাচ্ছেন না এমন সিঙ্গেলদের খোলা মাঠে প্রেম নিবেদনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে দুজন সেরা সিঙ্গেল মানুষ নির্বাচন করা হয়েছে। সেরাদের নিয়ে কাকতাড়ুয়া প্রোডাকশন হাউজ থেকে রোমান্টিক গানের মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করা হবে জানিয়েছে তারা। তাছাড়া উপস্থিত সকল সিঙ্গেলদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার তুলে দেয়া হয়েছে। নন ভ্যালেনটাইন মহাসমাবেশে অংশ নেয়া নিশাত তানজুম বন্য বলেন, ‘এটি একটি মজার মহাসমাবেশ ছিল। আমার মতো এখনো যারা প্রেম করতে পারেননি বা করেননি এমন মানুষরা এক হয়েছি।’ মাধব কর্মকার বলেন, ‘আমাদের অনেকেই ছোট্ট কিছু কারণে বড় প্রেম বিসর্জন দিতে হয়, তা কখনো কাম্য নয়।’ অংশ নেয়া জামান মোহাম্মেদ মুফি বলেছেন, ‘প্রেম একটি মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়। সকলের জীবনেই প্রেম থাকা উচিত।’ বক্তারা এসময় মানব প্রেমের পাশাপাশি দেশ প্রেম, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা, নৈতিক উন্নতি বিষয়ে আলোচনা করেন। ভবিষ্যতে প্রতি বছর ভালোবাসা দিবসের আগের দিন এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন কাকতাড়ুয়ার সভাপতি খলিলুর রহমান ফয়সাল। আর এই অনুষ্ঠানে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, লিডিং ইউভার্সিটি, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, এমসি কলেজ, সরকারি কলেজ, উইমেন্স কলেজ, মদনমোহন কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এই মহাসমাবেশে অংশ নিয়েছে। অনুষ্ঠানের আয়োজক খলিলুর রহমান ফয়সল মানবজমিনকে জানিয়েছেন, এই আয়োজন ভালোবাসার দিবসের প্রতিদ্বন্দ্বী কিংবা প্রতিপক্ষ নয়। এই সমাজে অনেকেই আছেন ভালোবাসা দিবসে মনটা তাদের কালো মেঘে আচ্ছন্ন করে রাখে। এ কারণেই এই আয়োজন এবং প্রথম আয়োজন অনেকটা সফল হয়েছে। প্রায় ৪ ঘণ্টার আয়োজনে কোনো ক্লান্তি ছিল না। তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানে এসে প্রাণখুলে আনন্দ বেদনা ভাগাভাগি করা হয়েছে। এটাই হচ্ছে এই অনুষ্ঠানের সার্থকতা। সবার নজর পাহাড়ে: এমসি কলেজের জ্বলে যাওয়া ওই ছাত্রাবাসের পাশেই একটি টিলা। ওই টিলার ওপর এসে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। তরুণ-তরুণীরা পাহাড়ের চূঁড়ায় বসে উপভোগ করেন গোটা সমাবেশ। আর এ দৃশ্য দেখে ভিড় জমান অনেক শিক্ষার্থী। তারাও ব্যতিক্রমী এই আয়োজনটি উপভোগ করেন প্রাণভরে। কেন পাহাড়ে সমাবেশ? -এমন প্রশ্ন করা হলে আয়োজকরা বলেন, এবার প্রথমবারের মতো এই আয়োজন। এছাড়া এমসি ক্যাম্পাসেও অনুষ্ঠান ছিল। এ কারণে সবার সম্মতিতে পাহাড়ে কথা হয় আয়োজন। তারা বলেন, সমাবেশের আগে মূল আয়োজন ছিল র‌্যালি। সেটি হয়েছে। টিলাগড় পয়েন্ট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা হেঁটে হেঁটে এসে র‌্যালি করা হয়। র‌্যালিটি সবার নজর কেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *