এটিএমের টাকা উধাও, কারণ ক্যাশ মেশিনে ‘স্কিমিং ডিভাইস’

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

 

 

2016_02_13_19_37_58_eL1fEqQajWQmEN3YDTYoM8Gkr7NcM1_original

 

 

 

 

ঢাকা : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকদের অজান্তে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। আর এটিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘স্কিমিং জালিয়াতি’ বলে মনে করছে। গতকাল শুক্রবার ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) এটিএম বুথ থেকে বেশকিছু গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে রাখা টাকা তুলে নেয় জালিয়াতরা। পরে বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আনায় এই এটিএম বুথগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।

এদিকে ইবিএল গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা বেহাত হওয়ার ঘটনা তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। এতে কোনো ব্যাংকের যদি নিরাপ্তাজনিত দুর্বলতা পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পেরেছে, কয়েকটি ব্যাংকের ক্যাশ মেশিনে ‘স্কিমিং ডিভাইস’ লাগিয়ে রেখেছিল কেউ। যে দুই-তিন দিন এই ‘স্কিমিং ডিভাইস’ লাগানো ছিল, সেসময় যে গ্রাহকরা এই মেশিনগুলো ব্যবহার করেছেন তাদের কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে গেছে।

আর কার্ডের তথ্য চুরি করে সেই তথ্য দিয়ে ক্লোন-কার্ড তৈরি করা যায়। যারা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তারা যদি এই ক্লোন কার্ডের পিন নম্বরও জোগাড় করতে পারে, তাহলে কার্ডটি ব্যবহার করে টাকাও তুলে নিতে পারে। এই ধারণার পক্ষে প্রমাণ হিসেবে কিছু তথ্যও পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর সেটি স্বীকারও করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা।

 

তবে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আমানত গেলে তা অবশ্যই উদ্বেগের কারণ। তদন্ত না হলে বুঝা যাবে না আসলে কি ঘটেছে বা কিভাবে ঘটেছে ঘটনাটি। এর জন্য ব্যাংক নিজেদের মত করে তদন্ত করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও তদন্ত করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আলাদা করে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করতে হয় না। কারণ যখনই ব্যাংখগুলোতে চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ঘটে সেটাকে খুঁজে বের করার জন্য সবসময় অনসাইড ইন্সপেকশন করার জন্য টিম রয়েছে। আলাদা কমিটি করার প্রয়োজন পড়ে না।’

তিনি জানান, বুথ ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় সবগুলো ব্যাংকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। যাতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পারে। তদন্তের পর দায়ী হিসেবে যাদের পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এস কে সুর বলেন, ‘কোনো ব্যাংকেরও যদি নিরাপত্তাজনিত ঘাটতি আমরা খুঁজে পাই তবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার ইস্টার্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ডধারী অন্তত ২১ জন গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটার অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর এ বিষয়ে সব ব্যাংকের জন্য সতর্কতা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন ব্যাংক তাদের নিজস্ব এটিএম বুথ ছাড়া অন্য ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তোলার সুযোগ সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের নামে ৯০ লাখের বেশি ব্যাংক কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫ লাখ ডেবিট কার্ড এবং পাঁচ লাখ ক্রেডিট। অন্যদিকে দেশজুড়ে বিভিন্ন ব্যাংকের প্রায় সাত হাজার এটিএম বুথ রয়েছে। আর সেই এটিএম বুথ নিয়েই এখন মানুষের যতো শঙ্কা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *