রাজশাহী: রাজশাহীর পবায় এবার স্কুল শিক্ষার্থীকে হাত-পা বেঁধে পেটানোর দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করা হয়েছে। চুরির অপবাদ দিয়েই ওই শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও গণমাধ্যমকর্মীরা তা জানতে পারেন শনিবার।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নাম জাহিদ হাসান। সে পবার বাগসারা এলাকার ইমরানের ছেলে। তাকে পবার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নির্যাতনকারীরা উঠে-পড়ে লাগায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।
নির্যাতনের শিকার জাহিদের মা শিউলি জানান, তার ছেলে শুক্রবার দুপুরে পবার বিরস্তইল এলাকায় তার নানার বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিল। এসময় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের বিমান বন্দরের সামনে থেকে জাহিদ হাসানকে ধরে আনে ওই এলাকার পলাশ, নাসির উদ্দিন, জামাল, রাজ্জাক, অনিক ও তুহিনসহ আরো কয়েকজন। পরে তারা চৌবাড়িয়া গ্রামের ফজলুর বারির ঘরের ফেলে হাত-পা বেঁধে জাহিদকে নির্যাতন করা হয়।
শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত তার ওপর চলে চুরির স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য মারপিট। নির্যাতনের ওই দৃশ্য ভিডিওতে ধারণও করা হয়। শেষে জাহিদ মোবাইল চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় তার বাবা ইমরানের হাতে তাকে তুলে দেয়া হয়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় পবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। তবে এ ঘটনাটি যেন কাউকে না জানানো হয়, এর জন্য জাহিদের পরিবারকে নির্যাতনকারীদের পক্ষ থেকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়। একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে নেয় ফজলুর বারির ছেলে রাকিবসহ অন্য নির্যাতনকারীরা।
আহত জাহিদ হাসান অভিযোগ করে জানান, শুক্রবার সকালে ফজলুর বারির ছেলে রাকিবের একটি মোবাইল চুরি হয়। ওই চুরির ঘটনায় এলাকার ইমন নামের ১২-১৩ বছরের এক শিশুকে ধরে নিয়ে ফজলুর বারির পরিবারের লোকজন। এরপর তারা ইমনকে মারধর করে। ইমন তখন ওই মোবাইল চুরিতে জাহিদও জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেয়। এরপর জাহিদকে ধরে নিয়ে গিয়ে ফজলুর বারির লোকজন মারিপট করে।দুই পা ফাঁক করে নির্যাতন
জাহিদের বাবা ইমরান অভিযোগ করে বলে, জাহিদকে নির্যাতনের পর থেকেই নাসির এবং তাদের লোকজন অব্যাহত হুমকি দিচ্ছে। এ নিয়ে থানায় বা অন্য কোথাও অভিযোগ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। তবে নাসির ওই নির্যাতনের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এটি সঠিক নয়। আমি কাউকে মারিনি।
বিষয়টি নিয়ে পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন গতব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গেল বছরের ৮ জুলাই সিলেটে শিশু রাজনকে চুরির অভিযোগে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নির্যাতনের ঘটনা ভিডিওতে ধারণ করা হয়।