পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে হাপুস নয়নে কাঁদছিল মেয়েটি। সামনে তখন উঠছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। ব্যাকগ্রাউন্ডে জাতীয় সঙ্গীত, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’। এতদিন তো তাঁর নাম তেমনভাবে কেউ শোনেইনি। কে এই মেয়ে? তাঁর চোখের জলের সঙ্গে ততক্ষণে মিশে গিয়েছে পুরো গ্যালারির আবেগ। গুয়াহাটিতে চলছে সাউথ-এশিয়ান গেমস। সেখানেই বাজিমাত বঙ্গকন্যার। যে বাংলাদেশ সারাক্ষণ ডুবে থাকে ক্রিকেটে। সেখান থেকে একটু আধটু প্রচার পায় ফুটবল। বাকি খেলা বাংলাদেশে না থাকার সামিল। সেখান থেকেই বিশ্ব মঞ্চে বাজিমাত মাবিয়া আক্তারের। সাউথ-এশিয়ান গেমসে দেশকে ভারোত্তলনে এনে দিলেন প্রথম সোনা। একজন মেয়ে তাও আবার ভারোত্তলনের মতো খেলায়। এটাই বা কম কি? আবেগটা সেই সোনার মেয়ের দেশকে সোনা এনে দেওয়ার।
পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকার দিকে তাকিয়ে স্যালুট করছিলেন মাবিয়া। চোখে অঝোর ধারা। গলায় সোনার মেডেল চকচক করছে। বাংলাদেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে নতুন খেলার উত্তরণ হল কি না তা ভবিষ্যতই বলবে। কিন্তু সাউথ-এশিয়ান গেমসে ছাপ রেখে গেলেন এই মেয়ে। তাঁর কান্না বলে দিল কতটা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে থেকে এই সব খেলায় উঠে আসতে হয়। যেখান থেকে উঠে এসে এই সাফল্য বাংলাদেশের ক্রীড়ায় পরিবর্তন আনতে পারে। অন্যান্য খেলায় এখন মাবিয়াই সেরা বিজ্ঞাপন। দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে এই দৃশ্য বহুদিন মনে রাখবে মানুষ। হয়তো আরও মানুষ এগিয়ে আসবে অন্য খেলায় মাবিয়ার পথ অনুসরণ করে।
কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে মাবিয়া একটি মেয়ের আবেগ। সাফল্যের আবেগ। অনামী খেলার বিশ্ব মঞ্চে উঠে আসার আবেগ। দেশের নাম দশের সামনে তুলে আনার আবেগ। মাবিয়ারা এভাবেই ফিরে ফিরে আসুক বিশ্ব মঞ্চে বার বার।
– আনন্দবাজার