ঢাকা : আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ থেকে আরো ৩ লাখ কর্মী নেবে কাতার। কর্মী নিয়োগে নামাজিদের অগ্রাধিকার দিতে বলেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে বাংলাদেশের কর্মীদের পরিশ্রমেরও উচ্চসিত প্রশংসা করেছেন দেশটির নীতি নির্ধারকরা।
কাতারে তিনদিনের সফর শেষে রোববার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে নামাজির প্রশ্নটা এলো কেন? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তারাই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল তোমাদের দেশের লোক নামাজি কি না। আমরা তাদের বলেছি, হ্যাঁ অধিকাংশ মানুষই নামাজি।’
তিনি বলেন, ‘আগে কাতার সরকার জানতো বাংলাদেশ ৭৫ শতাংশ মুসলিমের দেশ। কিন্তু আমরা তাদের বলেছি, বাংলাদেশের ৯৫ ভাগই মুসলিম। তখন তারা বলেছেন- তোমরা আমাদের ভাই। তোমাদের দেশ থেকে অধিক সংখ্যক দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মী নিতে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।’
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘কাতার সফরকালে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন খলিফা আল থানি এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ড. ঈসা সাদ আলজাফালি আল নুয়াইমির সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স বলেও কাতারের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।’
দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মী নিতেই দেশটির বেশি আগ্রহ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কাতারের প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আমাদের বলেছেন- তারা বাংলাদেশ থেকে বিক্রয়কর্মী, নার্স, ডাক্তার, প্রকৌশলী ও অফিস কর্মচারীসহ সকল খাতে কর্মী নিতে চায়।’
বেতন-ভাতা এবং অভিবাসন ব্যয় কত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা উভয় দেশের যৌথ কমিটি বসেই ঠিক করবে। দেশটিতে বর্তমানে ন্যূনতম বেতন ৭শ রিয়াল, তা বৃদ্ধি করে ১২শ রিয়াল করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।’
নুরুল ইসলাম বিএসসি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বিদায়ী ২০১৫ সালে এক লাখ ২৩ হাজার ৯৬৫ কর্মী গেছে কাতারে। ২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। এ জন্য দেশটিতে নির্মাণকর্মী, সেবাখাত ও বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এমনো হতে পারে চলতি বছরে দুই লক্ষাধিক কর্মী যেতে পারে কাতারে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী দুই বছরে তিন লক্ষাধিক কর্মী যাবে দেশটিতে। এসব কর্মী নিতে আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় উভয় দেশের যৌথ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএিইটি) মহাপরিচালক বেগম শামসুন নাহার, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ জুলহাস, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুর রউফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।