ঢাকা : দেশের বাইরে কয়লাখনি ইজারা নিতে চায় সরকার। ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া অথবা দক্ষিণ আফ্রিকার খনির বিষয়ে সরকারের আগ্রহ রয়েছে। খনি ইজারার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসকে নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, দূতাবাসগুলোতে গত ৩ জানুয়ারি এ চিঠি পাঠানো হয়। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি জ্বালানি বিভাগ পররাষ্ট্র মন্ত্রলাণয়ে একটি চিঠি পাঠায়। জ্বালানি বিভাগের উপসচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে বলা হয়, সরকার ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ কয়লা থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ৯ এপ্রিল এক বৈঠকে বিদেশে খনি ইজারা নিয়ে কয়লা উত্তোলনের নির্দেশ দেন।
জ্বালানি বিভাগ এখন বিভিন্ন দেশের কয়লাপরিস্থিতি জানার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য দেয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসকে তথ্য জোগারের নির্দেশনা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের মজুদ দিনে দিনে কমতে থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনায় কয়লাকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিতর্কে দেশীয় উৎসের কয়লা উত্তোলন থমকে থাকায় বিদেশের কয়লার দিকে ঝুঁকছে সরকার।
পেট্রোবাংলার তথ্য মতে, আবিষ্কৃত ২৬টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২০টি বর্তমানে উৎপাদনে রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ ১৪ দশমিক ১৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। এরমধ্যে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের পরিমাণ ৭ টিসিএফ যা আগামী ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে শেষ হবে। এজন্যই নিশ্চিত জ্বালানি প্রাপ্তির নিশ্চয়তায় কয়লাখনি ইজারা নেয়ার কোন বিকল্প নেই।
মহাপরিকল্পনা অনুসারে, ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কয়লা থেকে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর অর্ধেক বিদ্যুৎ আমদানি কয়লা দ্বারা উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য চীন, ভারত, কোরিয়া ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কয়েকটি বৃহৎ (১২০০ থেকে ১৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার) বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।
এজন্য ভবিষ্যতে বছরে তিন কোটি টনের বেশি কয়লা আমদানি করা লাগবে। বাকি বিদ্যুতের জন্য বছরে তিন কোটি টন দেশি কয়লা লাগবে। তবে দেশি খনির ব্যবস্থাপনা জটিলতা না কাটলে পুরোটাই আমদানি করতে হবে।
বর্তমানে দেশে আবিষ্কৃত ৫টি খনিতে প্রায় ৩০০ কোটি টন কয়লা মজুদ রয়েছে। তবে শুধু বড়পুকুরিয়ার খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হয়, যা দিয়ে ২৫০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানো হচ্ছে।