গাজীপুর: গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাফারি পার্কে শতশত দর্শনার্থী আসেন। কিন্তু পার্কে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশ করায় তাদের চলাচলে বেশ বিপাকে পড়তে হয়। আর পশু-পাখির জন্য ক্ষতি তো আছেই।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ইন্দ্রবপুর এলাকায় ভাওয়াল গড়ের বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন এখানে। শিক্ষাসফরে আসেন বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও।
কিন্তু পার্কের ভেতর যানবাহন প্রবেশে সর্ম্পূণ নিষেধ থাকলেও অনেকেই সেখানে মোটরসাইকেল নিয়ে অহরহ ঢুকছেন। এমনকি মোটরসাইকেলে করেই পার্কে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা।
এ নিয়ে দর্শনার্থীদের চলাচলে সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া পার্কে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চলাচল করলে অনেক সময় পশু-পাখিও ছুটোছুটি করে। তবে এ বিষয়ে পার্কের নিরাপত্তারক্ষী কিংবা কর্মকর্তাদের কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
পার্কের দর্শনার্থী মো. মঞ্জুর হোসেন মিলন জানান, কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে এখানে প্রতিদিন দর্শনার্থীদের নানা দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
ঢাকার কচুক্ষেত এলাকা থেকে পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে সাফারি পার্কে এসেছেন মো. আবদুল মালেক।
তিনি জানালেন, ঢাকার পাশে হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেশ ভালো। কিন্তু পার্কের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দর্শনার্থীদের জন্য বেশ বিরক্তিকর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘৫০ টাকার টিকিট নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার পরও অনেক পশুপাখি দেখতে হলে আলাদা টিকিট নিতে হচ্ছে। যাকে বাড়তি হিসেবেও দেখছেন দর্শনার্থীরা।’
সাফারি পার্কে বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক, ময়ুর, নানা প্রজাতির পাখি, হাতি, কুমিরসহ নানা প্রজাতির পশু-পাখি রয়েছে। এসব দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করেন দর্শনার্থীরা।
বিশেষ করে শিশুদের পশু-পাখি দেখাতে নিয়ে আসেন অভিভাবেকরা। তবে সেখানেও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন অনেকে।
নরসিংদী থেকে দর্শনার্থী তাহমিনা আফরোজ কাকলী বলেন, প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি মুক্ত বাঘ দেখতে। কিন্তু আমাদের পরে এসেও অনেকে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে লাইনে না দাঁড়িয়েই ভেতরে চলে যান।
এসব বিষয়ে সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিব প্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, এখানে প্রতিদিনই হাজার হাজার দর্শনার্থী আসছেন, এতে পার্কের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
‘আমরা এতো দর্শনার্থী চাই না। অনেক দর্শনার্থী গাছের পাতা ফুল ছিঁড়ে ফেলেন, আবার কেউ কেউ পানিতে থাকা কুমির ও পশু-পাখির গায়ে ঢিলও ছোঁড়েন। যা কোনো মতেই কাম্য নয়।’
মোটরসাইকেল ও গাড়ি প্রবেশের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে পার্কের ভেতরে প্রবেশ করছেন তারা আমাদেরই কর্মচারী, বাইরের কেউ নয়।