ঢাকা : গত বছর ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের মধ্যেই শুরু হয়েছিল এসএসসি পরীক্ষা। তাই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা ছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ‘ঠান্ডা’। রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবেই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিল এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হয়েছে। এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
প্রথমে বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা দুটোর মধ্যে ১০ মিনিটের ব্যবধান থাকবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হবে।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৮ লাখ ৪২ হাজার ৯৩৩ এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৮ হাজার ৫৯০ জন।
গতবারের তুলনায় এবার মোট ১ লাখ ৭২ হাজার ২৫৭ পরীক্ষার্থী বেড়েছে। এরমধ্যে ছাত্র ৭৯ হাজার ৫৯৪ এবং ছাত্রী ৯২ হাজার ৬৬৩ জন।
গত বছরের তুলনায় মোট প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি পেয়েছে ৩১১টি, কেন্দ্র বৃদ্ধি পেয়েছে ২৭টি। এ বছর নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৯২৭ জন। অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭১৪ জন। বিশেষ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা (যারা ১, ২, ৩ ও চার বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে) ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭৪ জন।
চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা ১৯ হাজার ২৬০ জন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর ছাত্র সংখ্যা ৬ লাখ ৪২ হাজার ৫০৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৬১ হাজার ৭৬৭ জন।
দাখিল পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৬৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ৯৬ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ১ লাখ ২১ হাজার ৭৫৯ জন। এছাড়া ভোকেশনাল পরীক্ষায় ৯৮ হাজার ৩৮৪ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে। এর মধ্যে ছাত্র ৭৩ হাজার ৩৩০ এবং ছাত্রী ২৫ হাজার ৫৪ জন।
বিদেশে ৮টি কেন্দ্রে মোট ৪০৪ পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। এরমধ্যে ছাত্র ২০১ এবং ছাত্রী ২০৩ জন।
এ বছর ৭ জন অটিস্টিক পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। তাদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে।
তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৮ মার্চ শেষ হবে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ৯ মার্চ থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ১৪ মার্চ।
এবারও সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকালের পরীক্ষা ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নেয়া হবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে এবারও ফল প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে শুধু ফেসবুক নয়, রাষ্ট্রীয় ছাপাখানা বিজি প্রেসকেও কঠোর নজরাদরিতে রাখা হয়েছে এবার। নজরদারিতে রাখা হয়েছে দেশের বিভিন্ন কোচিং সেন্টারগুলোকেও। প্রতিবছর পরীক্ষার ফল ঘোষণার সময় ‘টপ টুয়েন্টি’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের যে রেওয়াজ সেটিও এবার থাকছে না। ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন।