আগামী ২৮ মার্চ অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন নিয়ে এখনও খুব একটা তোড়জোড় শুরু হয়নি। এমনকি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিসহ উপ-কমিটিগুলো গঠনের কার্যক্রমও এগোয়নি। তবে তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত সবার আগ্রহ- কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের ২০তম সম্মেলনে আবারও সভাপতি হচ্ছেন, এ বিষয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের অবকাশ নেই। তাকে ছাড়া অন্য কাউকে দলের নেতাকর্মীরা সভাপতি হিসেবে কল্পনাও করেন না। তবে নতুন সাধারণ সম্পাদক নিয়ে নানামুখী তৎপরতা শুরু হয়েছে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেও এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ চাইছেন।সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের এমন একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী সদস্য জানিয়েছেন, সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী নেতাদের তালিকা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর তিনি এ নিয়ে চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করবেন। তবে দক্ষ, যোগ্য, ত্যাগী, পরিশ্রমী ও বিশ্বস্ত একজন নেতাকে সাধারণ সম্পাদক করার প্রস্তুতি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। এখন পর্যন্ত বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফকে নিয়েই বেশি আলোচনা চলছে। আপাতত তার দিকেই পাল্লা ভারী। তবে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম এসেছে আরও পাঁচ নেতার।তারা হচ্ছেন- দলের সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সেতু ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।সৈয়দ আশরাফ দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হওয়ায় তার বিকল্প নিয়ে কেউ খুব একটা না ভাবলেও তাকে সাধারণ সম্পাদক করা হলে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নিয়ে কেউ কেউ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে আবারও সাধারণ সম্পাদক করা হলে দলে কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক পদ সৃষ্টির চিন্তা-ভাবনাও শুরু হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্ত নিতে হলে গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হবে।সংশ্লিষ্ট নেতারা বলেছেন, এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা নিয়ে এখনও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে তারা এ প্রস্তাব নিয়ে দলীয়প্রধানের সঙ্গে শিগগির আলোচনা করতে পারেন।২০০৯ সালের ২৪ জুলাই এবং ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বরের সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। দলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরও ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রী করা হয়।তবে স্বাস্থ্যগত কারণে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন মোহাম্মদ নাসিম। তিনি ওয়ান ইলেভেনের সময় গ্রেফতার হয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সাম্প্রতিক পৌরসভা নির্বাচনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রমে বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তাকে নিয়ে অনেকেই আশাবাদী। মাহবুবউল আলম হানিফ প্রতিদিনই বিরোধী দলের বক্তব্য ভালোভাবেই খণ্ডন করছেন। অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের সাংগঠনিক দক্ষতার বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্বের অজানা নয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকায় আলোচনায় এসেছেন সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকও।