আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বর্ণনা করেছেন, নৈশভোজ বলে। তবে, বিভিন্ন সূত্রের আভাস, গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সেখানে। বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রের তিন শীর্ষ ব্যক্তির উপস্থিতি কৌতূহল তৈরি করেছে নানা মহলে। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা), আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক ও এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রাষ্ট্রের তিন শীর্ষ ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত অন্য দুই ব্যক্তির নামই আলোচ্য বিষয়ের ইঙ্গিত পরিষ্কার করেছে।
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এমন এক সময়ে বঙ্গভবনে মিলিত হলেন যখন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার একটি বক্তব্য রাজতৈনিক মহলে বিপুল বিতর্ক তৈরি করেছে। অবসরের পর বিচারপতিদের রায় লেখা অসাংবিধানিক বলে মত দেন বিচারপতি সিনহা। বিরোধী মহলের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যকে স্বাগত জানানো হয়। তারা বলেন, অবসরের পর সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার যে রায় লিখেছেন, তা অবৈধ। যদিও ওই রায় প্রকাশের সময়ই প্রবীণ আইনবিদ টিএইচ খান বলেছিলেন, অবসরের পর লেখা ওই রায় বৈধ নয়। ওদিকে, প্রধান বিচারপতির বক্তব্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়েও তোলপাড় তৈরি করে। সংসদে প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করে বক্তব্য দেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা। এ অবস্থায় পরিস্থিতি যেন আরও খারাপের দিকে না যায় তা নিয়েই রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা বঙ্গভবনে আলোচনা করেছেন বলে সূত্রের আভাস। ‘মীমাংসিত’ কোন বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের কথাও বলা হয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অবসরের পর রায় লেখা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও বাংলাদেশে স্বাভাবিক রীতি হিসেবেই তা চলে আসছে। তবে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার ক্ষেত্রে শুধু অবসরের পরই রায় লেখা হয়নি। রায়ে একটি বড় পরিবর্তনও আনা হয়েছিল। প্রকাশ্য আদালতে যখন রায় ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন বলা হয়েছিল, সংসদ চাইলে দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক বহাল রাখতে পারবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত রায়ে তা ছিল না। অবসরে যাওয়া কোন বিচারপতি রায় পরিবর্তন করতে পারেন কি-না সে প্রশ্ন বোধ হয় আরও গুরুত্বপূর্ণ।