উচ্চ আদালতে ২১ কোটি টাকা সাশ্রয়ের জাদুকাঠি

Slider বাংলার আদালত

2016_01_27_23_18_49_dKQbC6dFUAYg23ykCOGJODVhMw8IjO_original

 

 

 

 

ঢাকা: এবার ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লাগছে সর্বোচ্চ আদালতে। কাগজে নয় অনলাইনে থাকবে সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের মামলার প্রতিদিনের কার্যতালিকা। এতে করে সাশ্রয় হবে ২১ কোটি টাকা।

অবশ্য সহকারীদের কথা মাথায় রেখে এর বিরোধিতা করে যাচ্ছেন সুপ্রিমকোর্টের সাধারণ আইনজীবী পরিষদের ব্যানারে একটি অংশ। এর প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছেন তারা।

জানা গেছে, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সুপ্রিমকোর্টের দৈনন্দিন কার্যক্রম (কজলিস্ট) অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। ফলে নিয়মিতভাবে সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে কজলিস্ট পাওয়া যাবে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের কাগজের কার্যতালিকা তুলে দিয়ে অনলাইন ভার্শনে কার্যতালিকা প্রকাশের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলন করে উদ্বোধন করা হবে।

গত তিনমাস পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতি অনুসরণের পর এবার ফেব্রুয়ারি থেকে কাগজে ছাপা কার্যতালিকা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।

এর আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আর্থিক সাশ্রয় এবং ডিজিটাল কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২০১৫ সাল থেকেই আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগে কাগজে লেখা কজলিস্ট তুলে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে পরীক্ষা মূলকভাবে কজলিস্ট কাগজে ছাপার সঙ্গে সঙ্গে অনলাইন ভার্শনেও প্রকাশ শুরু হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার সৈয়দ দিলজার হোসেন বাংলামেইলকে বলেন, অনলাইন ভার্শনে কার্যতালিকা প্রকাশিত হলে বছরে প্রায় ২১ কোটি টাকা বাঁচবে। আর্থিক সুবিধাসহ নানা বিষয়ে চিন্তা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

নিরাপত্তার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবধরনের ব্যাকআপ রেখেই আমরা এ পথে এগোচ্ছি। যাতে করে কারো কোনো সমস্যা না হয় সে বিষয়টিই আমাদের মাথায় আছে।

এদিকে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ অক্টোবর (২০১৫ সাল) থেকে অনলাইন ভার্সনে কজলিস্ট চালু করা হয়। পরীক্ষামূলক তিন মাস অনলাইনে তালিকা প্রকাশের পাশাপাশি ছাপার কাজটাও অব্যাহত ছিল। এখন থেকে বিজিপ্রেসে বলে দেয়া হবে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কজলিস্ট যেন আর না ছাপানো হয়।

এই উদ্যোগের বিরোধিতার বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহববু উদ্দিন খোকন বাংলামেইলকে বলেন, আইনজীবীরা কার্যতালিকা দেখেন না, মূলত এটি দেখেন আইনজীবীদের সহকারীরা। তিনি বলেন, আইনজীবী সহকারীরা অল্পশিক্ষত,  তারা অনলাইন সম্পর্কে ভালো বুঝবেন না। এজন্য কাগজের কজলিস্ট থাকা উচিত।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে উভয় বিভাগের কজলিস্ট অনলাইনে এবং কাগজে ছাপা (একত্রে) তিন মাস পরীক্ষামূলকভাবে চালু থাকার পর কাগজের কার্যতালিকা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়া হবে। এজন্য আগের দিন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আপিল বিভাগের কার্যতালিকা প্রস্তুতকারী ডেপুটি রেজিস্ট্রার এবং হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ অফিসারদের পরবর্তী দিনের অনুমোদিত কার্যতালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

এতে আরো বলা হয়, ১ নভেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের কার্যতালিকা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটের মাধ্যমে অনলাইনে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিন মাস পরীক্ষামূলকভাবে কাগজে ছাপা ও অনলাইন কার্যতালিকা ব্যবস্থা একত্রে চালু থাকার পর কাগজে কার্যতালিকা ছাপা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়া হবে।

এর আগে লন্ডনে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ১ নভেম্বর থেকে উচ্চ আদালতের সব কার্যক্রমের তথ্য অনলাইনে পাওয়া যাবে। এতে মামলা শুনানির তারিখ ও এর ফলাফল নিয়ে অতীতের মতো আইনজীবীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। পর্যায়ক্রমে পুরো বিচারিক কার্যক্রমকে ডিজিটাল করা হবে। বিশ্বের যেকোনো স্থানে বসে মামলা করা, মামলার তথ্য জানা বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্য প্রদান ও প্রমাণ হাজির করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *